সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ইসকনের মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোঘাটের এক জনসভা থেকে বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এই আবহে বাংলায় প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃণমূল এবং মমতাকে তোপ দেগেছিলেন। আর এবার রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানালেন মমতাকে। (আরও পড়ুন: এখনও শেষ হয়নি ভোট, এর মাঝেই আরও একদফা ডিএ বাড়ল! নির্দেশ জারি অর্থ দফতরের)
আরও পড়ুন: 'জানি না' বলেও রামকৃষ্ণ মিশনে হামলাকে 'পারিবারিক বিষয়' আখ্যা মমতার!
এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ভগবান এই সব তাঁর মুখ দিয়ে বলাচ্ছেন। কারণ সামনেই তাঁর পতন এসে গিয়েছে। প্রথম দফার ভোট থেকেই মমতা হারতে শুরু করেছেন। আমরা ৩০ আসনে জয়ের দিকে এগোচ্ছি। দিদিমণি নেমে ১৫ হয়েছেন। আর কত নামবেন জানি না। সিঙ্গেল ডিজিট হয়ে যেতে পারে। প্রত্যেক দফার প্রচারে তাঁর কথাবার্তা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, যে তিনি উদ্বিগ্ন। আগে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে গালাগাল দিচ্ছিলেন। তারও আগে তাঁর দলের নেতাকর্মীরা রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতিকে গালাগালি দিয়েছেন। তিনি নিজে এর আগে ইভিএমকে গালাগালি দিয়েছেন। এবার আমাদের যে শান্তির জায়গা সেই ধর্ম প্রতিষ্ঠান এবং সাধু সন্ন্যাসীদেরকে অপমান করছেন তিনি। কারণ ভগবান এটা তাঁর মুখ দিয়ে বলাচ্ছেন। তাঁর পতন এসে গিয়েছে। এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।' দিলীপ বলেন, 'ভোটে সমস্ত কিছুর প্রতিফলন হবে। তারপর আমরা তাড়া করে করে এদের মারব।' তাঁর কথায়, 'প্রত্যেক বাঙালি আগে হিন্দু, তারপর সে বাঙালি।'
আরও পড়ুন: দীর্ঘ কয়েক বছরের মামলা শেষে মাথায় হাত সরকারি কর্মীদের, বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের
এর আগে নির্বাচনের সময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগ করে ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজকে বিঁধেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশনকেও 'কাঠগড়ায়' তুলেছিলেন। পরে অবশ্য সুর নরম করেছিলেন মমতা। তবে ১৮ মে তাঁর যে ভাষণ ঘিরে এই বক্তব্য, তাতে তিনি বলেছিলেন, 'সব সাধু এক হন না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে... কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরেই আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না... সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছে।'
আরও পড়ুন: 'এটা চাকরিজীবীদের অধিকার', মামলাকারী সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফোটাল আদালত
এরপর মমতা আরও বলেছিলেন, 'কে কে এই সব করছে, আমি তাদের চিহ্নিত করছি। আমি রামকৃষ্ণ মিশকে কোন সাহায্যটা করিনি। সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি সমর্থন করেছিলাম আপনাদের। সিপিএম কিন্তু তখন আপনাদের কাজ করতে দেয়নি। আর আসানসোলে একটি রামকৃষ্ণ মিশন আছে... দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলা হয়। কেন সাধুরা এই কাজ করবেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে। ওদের যারা মেম্বার হয়, দীক্ষা নেয়, তারা আছে। তাদের আমি ভালবাসতে পারি। আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কোনও দিনও। এটা আমি জানি। তা হলে আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব? মনে রাখবেন, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকত না, আপনাদের এই মেয়েটা যদি না থাকত।' মমতার এহেন ভাষণের পরই শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা হয়। যা নিয়ে বর্তমানে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।