ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব এখনও রয়ে গিয়েছে। কলকাতা ও গ্রামবাংলায় সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ের দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দফতর বলছে, আজ, সোমবার সারাদিনই এরকম নাগাড়ে বৃষ্টি চলবে। রেমালের প্রভাবে বেসামাল হয়ে পড়েছে গোটা জনদীবন। এই দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে আশ্বস্ত করেছেন যে প্রশাসন সবসময় পাশে আছে। আর্থিক সহায়তাও মিলবে। এবার ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের কাজে নেমেছেন নেতারাও। আপাতত সপ্তম দফার নির্বাচনকে পিছনে ফেলে একযোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোকেই পাখির চোখ করেছেন। ডান–বাম নির্বিশেষে সব প্রার্থীই উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। এভাবেই ভোটের আগে রেমাল রাজনৈতিক বিভেদ সরিয়ে সকলকে এক করল।
এদিকে বিপদ বাড়াচ্ছে জমা জলের উপর ঝড়ে ছিঁড়ে পড়া থাকা বিদ্যুতের তার। এই কারণে বাংলায় মৃত্যু হল একজনের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। মৃতার নাম তাপসী দাস (৫৩)। প্রবল দুর্যোগের মধ্যে ‘হুকিং’ করা তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটিতে। মৃতের নাম গোপাল বর্মণ (৪৭)। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা ফড়ে সিং ও তরুণ সিং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। সম্পর্কে তাঁরা বাবা–ছেলে। মৌসুনি দ্বীপে ৮০ বছরের বৃদ্ধা রেণুকা মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে। আর কলকাতার এন্টালিতে বাড়ির কার্নিস ভেঙে পড়ে এক প্রৌঢ় মহম্মদ সাজিবের (৫১) উপর। তাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: ‘নিহতদের নিকটজনের হাতে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা পৌঁছবে’, রেমাল নিয়ে আশ্বাস মমতার
অন্যদিকে মথুরাপুর এবং জয়নগর দুই লোকসভা কেন্দ্রই উপকূল এলাকায়। এখানে রেমাল আছড়ে পড়ার আগেই এলাকার একাধিক ত্রাণ শিবির তদারকি করেছেন মথুরাপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী যুব নেতা বাপি হালদার। সেখানে খাবার থেকে ওষুধ সব মজুত আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখেছেন। বাঁধ রয়েছে এমন এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন বাপিবাবু। আজ, সোমবার মৃত বৃদ্ধার বাড়িতে যান। আবার ডায়মন্ডহারবারের সিপিএম প্রার্থী প্রতীক–উর রহমানকে দেখা গেল, সাতগাছিয়ার ফলতায় ভেঙে পড়া কাঁচা বাড়ি মেরামতিতে বাড়ির সদস্যদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। তেমনই ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কেন্দ্রের পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছেন। সোমবার তিনি আমতলায় দলীয় কার্যালয়ে এসে সেখান থেকে দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন।
এছাড়া বরানগর এলাকায় প্রচুর গাছ পড়েছে। বৃষ্টিতে জল জমেছে। সকাল থেকেই দলের কর্মীদের নিয়ে সেসব সাফ করতে পথে নেমে পড়লেন দমদমের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌগত রায়। সাদা ধুতি–পাঞ্জাবি পরে হাতে বাঁশ নিয়ে নালার জল খুঁচিয়ে পরিষ্কার করলেন তিনি। পে–লোডার চালিয়ে রাস্তা পরিষ্কার এবং গাছের ঝোপে আটকে পড়া গাড়ি থেকে পাতা সরিয়ে জল নামিয়ে দেন। তাঁর পাশে ছিলেন বরানগর উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।