লোকসভা ভোটের ময়দানে প্রথমবার নেমে বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে হারিয়েছেন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। পাঁচ বারের সাংসদকে হারানোর পরে ‘জায়ান্ট কিলার’ তকমা পেয়েছেন এই তৃণমূল সাংসদ। ইউসুফ প্রায় ৮৫ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন। তবে এই ব্যবধান দেড় থেকে ২ লাখ হতে পারত বলে মন্তব্য করে দলের বিরুদ্ধে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। দলের জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে একাধিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ইউসুফের হয়ে ভোট প্রচারে চরম অসহযোগিতার অভিযোগ তুললেন তিনি।
আরও পড়ুন: হিন্দু ভোট ধরে রাখতে ব্যর্থ অপূর্ব! ইউসুফের জয়ের মার্জিন নিয়ে চিন্তায় TMC বিধায়ক
সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, ‘রেজিনগর বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি লিড পেয়েছেন ইউসুফ পাঠান। যার সংখ্যা হল ৫০ হাজার।’ তবে সেক্ষেত্রে এই বিধানসভা এলাকার বিধায়কের কোনও ভূমিকা নেই বলেই হুমায়ূন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এখানকার বিধায়কের কোনও ক্যালি নেই। তাঁকে দেখে মানুষ ভোট দেয়নি। আমি আগে এখানকার বিধায়ক ছিলাম। এখানে জেলা পরিষদে নির্বাচিত হয়েছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে এখানে পার্টি করেছি। তাই আমাকে দেখে এখানকার লোকে ভোট দিয়েছে।’
শুধু তাই নয় দলের জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে আরও অনেক নেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন হুমায়ূন। তিনি বলেন, ‘দলের ভিতরে অনেকেই আছেন যারা চায়না আমি সম্মানিত জায়গায় থাকি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহ পাই।’ তাঁর অভিযোগ, জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতারা যারা ভোট পরিচালনা করেছেন তারা ভোট প্রচারে ঠিকমতো সময় দেননি। এমনকী কর্মীদের চা খাওয়ার টাকা পর্যন্ত দেননি। বিধায়কের দাবি, তিনি যতটা পেরেছেন ভোট প্রচার করেছেন ইউসুফ পাঠানের হয়ে।
এপ্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তিনি আমার নেতৃত্বে। তিনি কখনও বকা দেন, আবার কখনও তিনি স্নেহ করেন। কখনও কথা বেশি বলতে বারণ করেন বা কখনও বলেছেন মুখে প্লাস্টার লাগিয়ে দেবো। তবে আমি তাঁর কথায় কিছু মনে করি না। কারণ তিনি আমার অভিভাবক, আমার গুরুজন, আমার নেত্রী। তাই তিনি আমাকে যা খুশি তাই বলতেই পারেন। তাতে আমার কোনও দুঃখ হয় না। তবে এখানকার কিছু নেতা আছে যারা আমার বিরুদ্ধে।’
হুমায়ূনের অভিযোগ, অনেকেই রয়েছেন যারা তৃণমূলের ব্যানারে তলে তলে অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। তার জন্যই এই ফলাফল হয়েছে। হুমায়ুন কবীর জোর গলায় দাবি করেন, যদি সকলে মিলে সহযোগিতা করতেন তাহলে সে ক্ষেত্রে ইউসুফ পাঠান দেড় লক্ষ এমনকী ২ লক্ষ ভোটেও জিতে যেতেন। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁর আর্জি, সেখানে দলের কিছু নেতা রয়েছেন তাদের নিয়ে যাতে সঠিক মূল্যায়ন করা হয়।