শ্রীনগরের পর এবার বারামুল্লা। জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ আবার প্রমাণ করলেন যে গণতন্ত্রের উৎসবের চেয়ে বড় কিছু নেই। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর প্রথম লোকসভা ভোট ছিল বারামুল্লায়। সোমবার পঞ্চম দফায় ভোট হয়েছে বারমুল্লা লোকসভা আসনে। সেখানে আগের সমস্ত রেকর্ডকে চাপিয়ে ৫৭.৪ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা ১৯৮৪ সালের পর সবচেয়ে বেশি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ৪০ বছরের মধ্যে এবার রেকর্ড ভোট পড়েছে বারামুল্লায়।
আরও পড়ুন: ভোট পঞ্চমীর ৪৯টি আসনের কটিতে গতবার ফুটেছিল পদ্ম? আজকের দফায় কে কোথায় এগিয়ে?
জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্য নির্বাচনে আধিকারিক পি কে পাল জানিয়েছেন, ‘আমি বারামুল্লার মানুষদের অভিনন্দন জানাতে চাই যে সমস্ত অসুবিধা সত্ত্বেও তারা এত বড় সংখ্যায় ভোট দিতে এসেছেন। এর মধ্যে কিছু পার্বত্য এলাকা রয়েছে, আবার কিছু তুষারাবৃত এলাকায় ভোট দিতে বেরিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বারামুল্লার বাসিন্দারা।’
প্রসঙ্গত, এদিন বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বারামুল্লায়। এই লোকসভা কেন্দ্রের ২১০৩ টি আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ২০১৯ সালে এখানে ৩৪.৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। আর ১৯৮৯ সালে মাত্র ৫.৪৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল। তবে এর আগে ১৯৮৪ সালে এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৬১.০১ শতাংশ। বারামুল্লা থেকে ২২ জন প্রার্থী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। যার মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ-সভাপতি ওমর আব্দুল্লাহ, পিপলস কনফারেন্সের সভাপতি সাজ্জাদ গণি লোন এবং নির্দল প্রার্থী শেখ আব্দুর রশিদ হলেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
উল্লেখ্য, একটা সময় ছিল যখন জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচন করাতে গিয়ে ঘাম ছুটে যেত নির্বাচনী আধিকারিকদের। ব্যালটের বদলে সেখানে চলত বুলেট। কিন্তু এখন সেই ধারা বদলেছে। জানা যাচ্ছে, সক্রিয় জঙ্গিদের পরিবার এবং নিষিদ্ধ সংগঠন জামাতে ইসলামের সদস্যরাও এদিন ভোটদানে অংশ নেন।
সক্রিয় জঙ্গি ওমরের ভাই রউফ আহমেদ উসু গ্রাম থেকে ভোট দিয়েছেন। তিনি সন্ত্রাসীদের হিংসা বন্ধ করে শান্তি এবং ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। রউফ বলেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিয়েছি। আমি আমার মা ভাইদের সঙ্গে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। ভোট আমাদের অধিকার আদায়ের একমাত্র উপায়। আমর ভাই গত ৬ বছর ধরে সক্রিয় লস্কর জঙ্গি। আমি তাকে দেশে ফেরার আবেদন জানাই।’
এদিন ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকেই পুরুষ ও মহিলা ভোটারদের ভিড় জমেছিল। সেখানকার মানুষদের কথায় তারা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং উন্নয়নের জন্য ভোট দিয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন, ভোট একজন মানুষের শক্তি এবং ভোটই পরিবর্তন আনতে পারে।