লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে বাংলায় এখন দেদার কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। রাত পোহালেই পঞ্চম দফার নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে এবার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। নির্বাচনের ডিউটি করতে এসে বাংলার মেয়েদের উপর কুস্পর্শ নামিয়ে আনার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনা এখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তা নিয়ে বড় আকার ধারণ করতে চলেছে। এখন রাজ্যে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তাঁর সরকারের বিএসএফ জওয়ানের এমন কাজ বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
ইতিমধ্যেই বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজভবনে যুবতী কর্মীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল। তারপর বাংলার এক নৃত্যশিল্পীকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। সেটা অবশ্য ঘটেছিল নয়াদিল্লির পাঁচতারা হোটেলে বলে অভিযোগ। মহিলাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। আর এবার অভিযোগ, অভিযুক্ত জওয়ান এক যুবতীকে জোর করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছেন। আতঙ্কে ওই যুবতী চিৎকার করলে এলাকার বাসিন্দারা ছুটে আসেন। হাতেনাতে ওই বিএসএফ জওয়ানকে ধরে ফেলেন। আজ, রবিবার সকালে এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়াতে।
আরও পড়ুন: মা উড়ালপুলে যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনা ঠেকাতে নয়া উদ্যোগ, প্রস্তাব যাবে নবান্নে
এমনিতেই বিএসএফ জওয়ানদের ভারী বুটের টহলদারিতে মানুষজন একটু ভয় পান। সেখানে সরাসরি মহিলাদের উপর যদি এমন আক্রমণ নেমে আসে তাহলে আরও আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হবে। নির্যাতিতা ওই যুবতীর অভিযোগ, আজ সকাল ৬টা নাগাদ প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাস্তা তখন প্রায় ফাঁকাই ছিল। এমন সময়ে উর্দিধারী এক বিএসএফ জওয়ান তাঁকে লক্ষ্য করে অশ্লীল ইঙ্গিত দেন। এমনকী তাতে সাড়া না দিলে কুপ্রস্তাব দেন। তখনই এই কুপ্রস্তাবের প্রতিবাদ করেন ওই যুবতী। আর প্রতিবাদ করতেই হঠাৎ ওই মহিলাকে জড়িয়ে ধরেন বিএসএফ জওয়ান। আর তাঁকে জোর করে ধরে চুমু খান। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করলে এলাকার বাসিন্দারা ধরে ফেলেন অভিযুক্তকে।
এই ঘটনার খবর যায় উলুবেড়িয়া থানায়। ছুটে তখন ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই ওই জওয়ানকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরই ওই নির্যাতিতা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। অভিযুক্ত এই জওয়ানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, জোর করে আটকে রাখা এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই বিষয়ে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া জানান, অভিযোগ পেতেই তাঁরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।