আগামীকাল, শনিবার ষষ্ঠ দফার লোকসভা নির্বাচন। আর তার একদিন আগে রাজ্যের একমাত্র মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় নতুন আতঙ্ক দেখা গেল। সেটি হল— ভোটের দিন যদি গজরাজের দল ভোটকেন্দ্রে হাজির হয় তাহলে তো চাপের বিষয়। এই চিন্তা থেকেই নির্বাচন মিশনের অফিসাররা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা বন দফতরে আগাম খবর দিল। বন দফতর সূত্রে খবর, ভোটের মরশুমে জঙ্গল অধ্যুষিত জেলায় ১০০ হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঝাড়গ্রামে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সেইসব হাতিরা যাতে লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেটাই এখন অগ্রাধিকারের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। হাতি নিয়ে এখন নাজেহাল ঝাড়গ্রাম জেলা। তাই নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাও।
ঝাড়গ্রাম জেলাকে অরণ্যসুন্দরীও বলে। তার কারণ এখানের গ্রামগুলি অরণ্যে ঘেরা। আদিবাসীদের আন্তরিকতায় গ্রামগুলি আলাদা মর্যাদা পেয়েছে। কোথায় ছোট পাহাড়, আবার কোথাও ঝর্ণার কলকল শব্দ। তার সঙ্গে রয়েছে চাষবাস এবং জীবজন্তু। ঝাড়গ্রাম জেলার এই অরণ্যভূমি চারটি ডিভিশনে বিভক্ত রয়েছে। এই চারটি ডিভিশনে প্রায় ১০০টির কাছাকাছি হাতি রয়েছে। তার মধ্যে ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে আছে ৭৩টি হাতি। খড়গপুর ডিভিশনে আছে ২২টি হাতি। বাকি ২–৩টে করে হাতি রয়েছে মেদিনীপুর এবং রূপনারায়ণ ডিভিশনে।
আরও পড়ুন: ‘এখন টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চাইছে, হারাতঙ্কে ভুগছে’, প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ মমতার
শনিবার ষষ্ঠ দফায় ভোট রয়েছে—তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর। সেখানে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় লোকালয়ে হাতি চলে আসার ঘটনা আকছার ঘটে। সেটা নিয়েই এবার চিন্তায় প্রশাসন। হাতির হামলার ঘটনা অনেক জায়গায় ঘটে থাকে। এই আশঙ্কার মধ্যেই ১৪০টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি তিনটি স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ২০০ বেশি। তাই জঙ্গল লাগোয়া বুথগুলিতে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা এবং বাড়তি নজরদারি। এমনকী জঙ্গলের প্রত্যেকটি রেঞ্জে তিন–পাঁচটি করে মোবাইল টিম, দুটো করে হুলা টিম, তিনটি করে গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
গজরাজের আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আজ বিকেল থেকে নিরাপত্তা কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। ভোটাররা যাতে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়তি মোতায়েন করা হচ্ছে। বুথ এলাকায় হাতি ঢুকে পড়লে হুলা পার্টি সেটা সামলাবে। ইতিমধ্যেই হাতির গতিবিধির উপর নজর রাখা শুরু করেছে বন দফতর। সকাল থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট যাতে দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাতির করিডোর দিয়ে মানুষের যাতায়াত আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। আর বসানো হচ্ছে ড্রপ গেট।