লোকসভা নির্বাচনের মুখে আবার বিজেপিকে স্নায়ুর চাপে ফেলে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন সিরিয়া পারভিন। এই নেত্রী ছিলেন বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক। এমনকী সিরিয়া সেই নেত্রী যিনি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজেপির ডাকা বসিরহাট পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে সামনে ছিলেন। আবার টাকিতে যে গাড়ির বনেটে সুকান্ত মজুমদার পড়ে গিয়েছিলেন, সেখানেও ছিলেন সিরিয়া। আজ, বৃহস্পতিবার মন্ত্রী শশী পাঁজা ও সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের উপস্থিতিতে তৃণমূল ভবনে এসে যোগ দেন সিরিয়া পারভিন। আর তার পরই চাপ বাড়তে শুরু করল রেখা পাত্র, পিয়ালি দাস এবং গঙ্গাধর কয়ালের। এই দিনেই ভাইরাল হয় অডিয়ো ক্লিপও।
এদিকে কিছু আগে সন্দেশখালি নিয়ে পর্ব–১ এবং পর্ব–২ স্টিং অপারেশনে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। তারপর আজ অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও ভিডিয়ো এবং অডিয়ো কোনওটিই যাচাই করে দেখেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে আজ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলে সিরিয়া। তিনি বলেন, ‘এতদিন যা ঘটানো হয়েছে সেটা পরিকল্পিত। ঘটানো হবে আরও কিছু সেটাও পরিকল্পিত। বুধবার সন্ধ্যায় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ এখানে এসে যোগ দিয়েছি।’ লোকসভা নির্বাচনের মুখে এমন ভাঙন এবং বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসায় বিজেপি নেতারা কি বলেন সেটাও দেখার।
আরও পড়ুন: ‘২০২৫ সালে বিহারে জন সূরয জিতে ক্ষমতায় আসবে’, বড় ভবিষ্যদ্বাণী করলে পিকে
অন্যদিকে এই ঘটনা যে বিজেপির অন্দরে আলোড়ন ফেলেছে সেটা বোঝা যাচ্ছে মুখে কুলুপ আঁটার মধ্যে দিয়ে। তবে সিরিয়া পারভিনের দাবি বুঝিয়ে দিচ্ছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করেছিলেন সেটা সঠিকই ছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিতে সিলমোহর পড়ল। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর সিরিয়ার বক্তব্য, ‘অনেকেই বলবে আমাকে তৃণমূল কংগ্রেস কিনে নিয়েছে। কিন্তু আর ক’দিন পরই ওখানে ভোট। এখন তো আমার কিছু পাওয়ার থাকতে পারে না। কী পাওয়ার আছে বলুন? অসত্যকে সত্য প্রমাণের চেষ্টা চলছে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা জড়িত নন সন্দেশখালিতে। সব অভিযোগই ভুয়ো।’
সিরিয়া পারভিনের চোখা চোখা বাক্যবাণের জবাব বিজেপি নেতারা সামলাবেন কেমন করে এখন সেই স্ট্র্যাটেজি ঠিক করার কাজ চলছে বলে সূত্রের খবর। এখন কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে রেখা পাত্র স্বস্তিতে আছেন। পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি জামিন পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সিরিয়া মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাতে কতটা স্বস্তিতে থাকতে পারবেন রেখা পাত্র বা পিয়ালি দাস, গঙ্গাধর কয়ালরা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। তবে সিরিয়া পারভিনের কথায়, ‘একটা জায়গা থেকে আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে আমাকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। মহিলাদের সম্ভ্রম রক্ষা করার আন্দোলন শুরু করি আমি। কিন্তু পরে বুঝি গোটাটাই হাতে লেখা গল্প। আন্দোলন করার জন্য মহিলাদের টাকা দেওয়া হতো, মোবাইল ফোন দেওয়া হতো।’