লোকসভা নির্বাচনে এখন মাঠে নেমে লড়াই করছেন প্রার্থীরা। দল পাশে থাকলেও লড়াই করতে হচ্ছে প্রার্থীকেই। তাই প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন প্রার্থীরা। সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে একটি লোকসভা আসন। তাই বড় জায়গায় একজন প্রার্থীকে প্রচার করতে হয়। এই আবহে প্রার্থীপদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিজেপির দেবাশিস ধরের। তাই তাঁকে বীরভূমের ঘোষিত প্রার্থী করেও সরিয়ে নয়। এই নিয়ে যখন প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধর পদক্ষেপ করতে চলেছেন তখন বড় সিদ্ধান্ত নিল বঙ্গ–বিজেপি। দেবাশিস ধরকে নয়া দায়িত্ব হিসাবে দলের রাজ্য কমিটির সদস্য করলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
দেবাশিস ধরকে প্রার্থী পদ থেকে সরিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বঙ্গ–বিজেপি। কারণ এই প্রার্থী পুলিশ অফিসার হওয়ায় শেষ দেখে ছাড়বেন বলেছিলেন। তাতেই খানিকটা ঘাবড়ে যায় বিজেপি নেতারা। তখন দেবাশিসকে ঠাণ্ডা করতে পরিকল্পনা করা হয়। আর আগে একবার দেবাশিস ধর বলেছিলেন, তিনি কর্মজীবন প্রশাসনিক কাজ করে কাটিয়েছেন। সেটা তাঁর ভাল লাগার জায়গা। তাই দলেও এমন কাজ করতে আগ্রহী। এবার তাঁর মনোনয়ন খারিজ হয়ে গিয়েছে। তাই দেবাশিস ধরকে ঠাণ্ডা করতে এই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বীরভূমের প্রার্থী করা হয় প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে। তিনি পদ থেকে ইস্তফা দিলেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্লিয়ারেন্স ছাড়পত্র মেলেনি। তাই তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। তিনি আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে সবটাই নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশনের উপর।
আরও পড়ুন: ‘এখানের সাংসদ তাঁতশিল্প নিয়ে উদ্যোগ দেখায়নি’, কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুকুটমণি
বিজেপির এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি দেবাশিস ধর। তাই মামলা করেন কলকাতা হাইকোর্টে। তাতে বঙ্গ–বিজেপির আরও চাপ বাড়ে। কারণ এই ঘটনার পর দেবাশিস ধরকে বিস্তর কটাক্ষের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শতাব্দী রায় দেবাশিসের প্রার্থী হতে না পারা নিয়ে খোঁচা দিয়ে ‘লগ্নভ্রষ্টা’ বলে কটাক্ষ করেছেন। দেবাশিস ধরকে সরানোর পিছনে বঙ্গ–বিজেপির নেতাদের যুক্তি, উনি কখনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাই সরানো হয়েছে। আর বিকল্প হিসাবে আরএসএস নেতা দেবতনু ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা হয়েছে।
তবে দেবাশিস ধরকে প্রার্থী করতেই শীতলকুচি প্রসঙ্গ সামনে চলে আসে। তাই দেবাশিস ধরের জায়গায় বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে দেবতনু ভট্টাচার্য মনোনয়ন জমা দেন। আর তারপরই ময়দানে নেমে হুংকার দিয়ে দেবতনু বলেছেন, ‘বিজেপি থেকে যেই দাঁড়াবেন মানুষ তাঁকেই ভোট দেবেন। কারণ লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীই প্রধান মুখ।’ যদিও এটা অহংকার হিসাবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। নীচুস্তরে সংগঠন না থাকলে কোনও আসনই জেতা সহজ হয় না। ইতিমধ্যেই বীরভূমে নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাঁরা বুঝতে পারছেন না কার সমর্থনে খাটতে হবে?