ষষ্ঠ দফার লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ–পর্ব শুরু হয়েছে। আজ, শনিবার সকাল থেকে উৎসবের মেজাজে ভোট হচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যে একটা তথ্য সামনে এসেছে। খণ্ডঘোষের ১৭০ এবং গলসির ১০১টি বুথে এজেন্ট দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে বিজেপির কাছে। অথচ বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের এই দুই এলাকা রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের অধীনে। আবার এই দুটি স্থানেই যথেষ্ট শক্তিশালী তৃণমূল কংগ্রেস। মজবুত সংগঠন রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। আর এই দুই জায়গায় সংগঠন গুছিয়েই উঠতে পারেনি গেরুয়া শিবির। সেটা অস্বীকারও করছেন না বঙ্গ–বিজেপির নেতারা।
এখানের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খণ্ডঘোষ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ছিল ৩০ হাজার ৪০০ ভোটে। আর গলসির সাতটি পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের লিড ছিল এক হাজার। এবারের লোকসভা নির্বাচনে খণ্ডঘোষ, গলসি মিলিয়ে লিড আরও বাড়াতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও খণ্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ বলেন, ‘এটা স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই আমরা ২৭১টা বুথেই এজেন্ট দিতে পারব। কিন্তু আমাদের এজেন্ট থাকবে না মানে বিজেপির ভোট হবে না সেটা নয়। আমরা ৬৫ থেকে ৭০টি বুথে এজেন্ট দিতে পারব না। এর পরেও আমরা জিতব। কারণ তৃণমূলের দুর্নীতি। মানুষ আমাদের ভোট দেবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাংসদের দেহ ৮০ টুকরো করতে কত টাকা মিলেছিল? খুনের তদন্তে নয়া মোড়
বিষয়টি কি সত্যিই এমন? মানুষ ভোট দেবে বিজেপিকে এই দাবির সঙ্গে বাস্তবের খুব একটা মিল পাওয়া যায়নি এখানে। তবে দিলীপ ঘোষ যিনি বর্ধমান–দুর্গাপুরের বিজেপির প্রার্থী তিনি নিজের চেষ্টায় ভোট টেনেছেন। কতটা টানতে পেরেছেন সেটা ৪ জুন জানা যাবে। তবে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন দিলীপ ঘোষও। ১৩ মে তাঁর কেন্দ্রে ভোটের শেষে তাই বলেছিলেন, ‘আমরা সব বুথে এজেন্ট দিতে পারিনি। এটা আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। কিন্তু সেটার মানে সব ভোট তৃণমূল পেয়েছে, এটাও নয়। বহু বুথে আমরা লিড পাব। মানুষের উপর আমাদের ভরসা আছে।’ তবে এখানে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। তিনিও কিছু কম ভোট টানেননি।
এখানের লড়াইটা সরাসরি বিজেপির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের। অন্যান্য দল তেমন দাগ কাটতে পারবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই এই দুই জায়গার ভোট দেখে কিছুটা ফুরফুরে মেজাজে তৃণমূল কংগ্রেস। খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম এই বিষয়ে বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের এই বক্তব্য রেকর্ড করে রেখে দিন। ভোটের সময়ে এরাই বলবে, তৃণমূল কংগ্রেস বুথে এজেন্ট বসতে দেয়নি। আসলে খণ্ডঘোষ বিধানসভার মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ৪০ থেকে ৪৫ হাজার ভোটে এবার আমাদের লিড থাকবে। নয়াদিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদীও ভোট করাতে এলে এই মার্জিন কমাতে পারবেন না। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের গ্যারান্টি।’