লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফা মিটে গিয়েছে। বাকি আছে আর তিন দফা। তাই সর্বত্র জোরকদমে নির্বাচনী প্রচার–সভা–সমাবেশ চলছে। পঞ্চম দফার প্রস্তুতি চলছে জেলায় জেলায়। এই আবহে কলকাতা হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বিজেপির তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। এই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী বেঁধে দেওয়া সময় পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্তও করতে পারবে না পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চ।
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না রাজ্য সরকার বলে জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। এমনকী বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, আগামী ২১ জুন এফআইআর যেটা করা হয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে কিনা বিচার করা হবে। তবে তার আগে মামলাকারীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। এই নির্দেশের সময় বিচারপতির মুখে শোনা যায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের বিষয়টি। সেটা উল্লেখ করেই বিচারপতি বলেন, ‘এখানে মামলাকারী নিজেও যেহেতু প্রার্থী, তাই আদালত এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আগামী ১২ জুন পরবর্তী শুনানি হবে।’
আরও পড়ুন: একই বিধানসভায় দুই সজলের লড়াই, নেমসেক বিতর্কে খাপ্পা বিজেপির কাউন্সিলর
সুতরাং ১২ জুন পর্যন্ত নিশ্চিন্ত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপর যা হওয়ার হবে। এই তারিখ পর্যন্ত কিছু করা যাবে না। আর আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং অন্য মামলাকারীর তদন্তের জন্যও ডাকা যাবে না। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মামলায় সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট যে অবস্থান নিয়েছে সেটা অনুসরণ করে কলকাতা হাইকোর্টের বক্তব্য, নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন কোনও প্রার্থীকে বিরক্ত করা যাবে না। কলকাতা হাইকোর্ট মনে করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যে যুক্তি দিয়েছে, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যেহেতু প্রার্থী, তাই সেটা তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
এছাড়া বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে প্রথমে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিচারপতি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালে বৃহস্পতিবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। তমলুকের সিজেএম–এর বক্তব্য অনুযায়ী, যে সব অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, পুলিশের আগে সেই সব অভিযোগের সত্যতা খুঁজে দেখা উচিত ছিল। কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছে। এমনকী দু’পক্ষকে নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। গত ৪ মে তমলুকে মনোনয়ন জমা দিতে যান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মিছিলে করে তা করা হয়। তবে মিছিলটি হাসপাতাল মোড়ে পৌঁছনোর পর অশান্তি শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠন ওখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। তাদের উপর হামলা করে বিজেপি বলে অভিযোগ। তখন ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মইদুল ইসলাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।