লোকসভা নির্বাচন এখন চলছে গোটা দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই দু’দফার নির্বাচন হয়েছে বাংলা–সহ অন্যান্য রাজ্যে। কিন্তু বাংলার বেশিরভাগ জেলায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। তার জেরে নানা জায়গায় গোঁজ প্রার্থী থেকে শুরু করে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়েছে বিজেপি নেতারা। আর এই কাণ্ডে বিজেপির সাংঘাতিক ক্ষতি হতে চলেছে বলে খবর। আর দলের অন্দরে এই পরিস্থিতি দেখতে পেয়েও রাজ্য নেতৃত্ব কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে খবর। কারণ লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে কোনও পদক্ষেপ করলে তাতে আরও হিতে বিপরীত হবে। তাই আগামী ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেবে বলে ঠিক করেছে বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে দলেরই বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা দাঁড়িয়ে পড়েছেন। বীরভূমে আবার প্রার্থী ঘোষণা করে শেষ মুহূর্তে আর একজনকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বিজেপি। এবার এমন একই ছবি দেখা যাচ্ছে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে। ফলে এই সব কেন্দ্রগুলিতে নির্বাচনে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বিজেপির। লোকসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে দলের বিক্ষুব্ধদের হাতে তালাবন্দি হতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে। তারপরও তাঁকেই প্রার্থী করে বিজেপি। নীচুতলার কর্মীদের কথা না শোনায় এবার সেখানে গোঁজ প্রার্থী দিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বিপুল পরিমাণ নগদ উদ্ধার হয়েছে দুরন্ত এক্সপ্রেসে, সাসপেন্ড হলেন তিনজন রেলকর্মী
এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে চরম মূল্য চোকাতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাঁকুড়া শহর–সহ ছাতনা এবং শালতোড়া এলাকায় সুভাষ সরকারের ছবিতে কালি মাখিয়ে প্রতিবাদ করা হয়েছিল। আর তা করেছিল বিজেপির বিক্ষুব্ধ অংশ। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার প্রাক্কালে শীর্ষ নেতাদের জানানো হয়েছিল, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করা হোক। না হলে জেতা সম্ভব নয় বলে সূত্রের খবর। কিন্তু বিজেপি সেই কথায় কর্ণপাত না করে সেই সুভাষ সরকারকেই বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে। তাতেই ক্ষেপে ওঠে দলের ওই বিক্ষুব্ধ অংশ। এবার দলীয় প্রার্থী সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে নির্দল গোঁজ প্রার্থী দিল তাঁরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন বিজেপির বাঁকুড়া জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জীবন চক্রবর্তী। জীবনবাবুর যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। সুভাষের বিরুদ্ধে তিনি প্রার্থী হওয়ায় ভোট কাটবে বিজেপির। আর লাভের গুঁড় খাবে তৃণমূল কংগ্রেস। সুতরাং এই কাজ ঘটলে বাঁকুড়া লোকসভা আসনটি বিজেপিকে হারাতে হতে পারে। লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে এভাবে দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি।