লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে তিনি বলেছিলেন, বিজেপি ৪০০ পার করতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু রাত পোহালেই পঞ্চম দফার নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। তার প্রাক্কালে নিজের আগের করা মন্তব্যের থেকে একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। এখন প্রশান্ত কিশোরের দাবি, কোনও দল বা নেতা তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জ না হলেও আমজনতাই নরেন্দ্র মোদীর কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থাৎ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন ধরে যা বলে আসছিলেন সেটাতেই কার্যত সিলমোহর দিলেন প্রশান্ত কিশোর।
প্রত্যেকটি নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যাচ্ছে, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস একচ্ছত্র আসন পাবে। আর কেন্দ্রে এবার ক্ষমতায় আসছে না নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ৪০০ পার তো অনেক দূরের ব্যাপার। ২০০ আগে পার করুক। সেখানে দক্ষিণ ভারতের এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর আজ রবিবার বলেন, ‘মানুষ এখন বুঝতে পারছেন ব্র্যান্ড মোদী অপরাজেয় নয়। কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না এমন ব্যাপার একেবারেই নয়। কোনও রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদ তাঁকে চ্যালেঞ্জ করুন বা না করুন সাধারণ মানুষ এখন তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছেন।’ অর্থাৎ দেশের মানুষ আর নরেন্দ্র মোদীকে চাইছেন না। সেটা স্পষ্ট করে দিলেন কিশোর।
আরও পড়ুন: শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত জওয়ানের বিরুদ্ধে নালিশ নির্বাচন কমিশনে, গর্জে উঠলেন শশী
কত শতাংশ মানুষ মোদীকে চাইছেন না? জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে এই প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে। আর তখনই প্রশান্ত কিশোরের বক্তব্য, ‘এই দেশে যেখানে এখনও ৬০ কোটি মানুষ রোজ ১০০ টাকার বেশি আয় করতে পারেন না তখন সেখানে সরকারের বিরোধিতা কখনও দু্র্বল হতে পারে না। বরং এই ভুলটা না করাই ভাল। এই দেশে বিরোধীরা একেবারেই দুর্বল নয়। কোনও দল এখানে ৫০ শতাংশ ভোট পায় না। একশো জন যদি ভোট দেন তাহলে মাত্র ৪০ জন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে, তাঁর আদর্শকে, রামমন্দিরকে, ৩৭০ ধারা বাতিলকে সমর্থন করেন। তাই ৪০ শতাংশ মানুষ মোদীকে নিয়ে খুশি আর বাকি ৬০ শতাংশ মানুষ অখুশি।’
প্রশান্ত কিশোরের এই বক্তব্য এখন বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ মানুষ যদি প্রত্যাখ্যান করেন তাহলে সত্যিই ৪০০ পার দূর অস্ত। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে রামমন্দির মারাত্মক আকারে তুলে ধরেছে বিজেপি। কিন্তু তাতে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। এই বিষয়ে প্রশান্ত কিশোরের কথায়, ‘বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ গ্রামীণ এলাকার মানুষজন। তাই এসবের পরও যদি বিজেপি জেতে তাহলে বুঝতে হবে বিরোধীরা এখনও শক্তিশালী নয়। কিন্তু তাও বলতে হয় দেশের সবাই খুশি নয়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে ব্র্যান্ড মোদী ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের থেকে অনেক দুর্বল। ২০২৪ সালে মোদীর ক্যারিশ্মাটা অনেক ফিকে হয়ে গিয়েছে।’