আগামী ২৬ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা শুরু হবে। তার আজ, মঙ্গলবার কুশমণ্ডীতে ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব সভা করতে আসেন। আর তখনই তাঁর সামনেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। মঞ্চে তখন উপস্থিত ছিলেন দেব। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা তখন নিজেদের মধ্যে সবুজ রঙের চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে শুরু করেন। যদিও এই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, দেবকে দেখার জন্যই। সামনে বসার জায়গা নিয়েই চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়েছে বলে খবর। তবে আজ বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাঁকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন এক ব্যক্তি। দেব তখন বিরক্তি না দেখিয়ে ওই ব্যক্তিকে জড়িয়ে ধরেন। এমনকী হাতও মেলালেন।
এই ঘটনায় ওই ব্যক্তি বেশ অবাকই হলেন। বিজেপির দেওয়া স্লোগান তুলেও এমন আন্তরিক আপ্যায়ন দেখে এই ব্যক্তি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। আর এটাই দেবের প্রাপ্তি। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন দেব রেগে যাবেন। উল্টোপাল্টা কথা বলবেন। সেটাই ভোটের বাজারে চাউর হবে। কিন্তু বিপরীতটা যে ঘটবে তা ভাবতে পারেননি ওই ব্যক্তি। তাই এই ঘটনার পর দেব সাংবাদিকদের বলেন, ‘রামনবমীতে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। ভারতবাসীকে কেউ যেন ধর্ম না শেখায়। আমরা মসজিদেও যাই, আবার অনেক মুসলমান সম্প্রদায়ের মানু্ষ শিরডি সাঁইবাবা মন্দিরেও যান। হ্যাঁ,অনেক সময় বিরোধী দলের নেতা–কর্মীরা দেখলে স্লোগান দেয়, ঠিক আছে।’
আরও পড়ুন: পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হলেন সুমন কাঞ্জিলাল, বেজায় চটল বিজেপি
এদিকে রায়গঞ্জে আজ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে রোড–শোতে অংশ নেন দেব ওরফে দীপক অধিকারী। ঘাটালের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেব বলেন, ‘আমার মনে হয় ঠিক আছে। দেবকে দেখলে একটু স্লোগান হবে না, তাহলে কি ভাল লাগে? দেব জানে, কীভাবে পুরো ব্য়াপারটা হ্য়ান্ডেল করতে হবে। আমার মনে হয়, সবকিছু রাগ, অভিমান দিয়ে হয় না। কিছু কিছু জিনিস ভালবাসা দিয়েই করতে হয়। যেটা দেখতেও পেলেন সবাই। যে ব্যক্তি আমাকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিলেন, সে ব্যক্তি যে রাজনৈতিক দলেরই হোন না কেন, তিনি আগে ভারতবাসী। এটা ওঁর দোষ নয়।’
অন্যদিকে এই বিভাজনের রাজনীতির জন্য বিজেপিকে দায়ী করেন দেব। তিনি এসব মানেন না বলেও জানান। তাঁর কথায়, ‘হিন্দু–মুসলিম, টিএমসি–বিজেপি, গরিব–বড়লোক এভাবে মানে অনেকে। ওদেরও দোষ নয়। বড় বড় নেতারাই এভাবে বিভাজন করে। আমি সেই বিভাজনে বিশ্বাস করি না। সবাই ভারতীয়। আমরা চাই, যেই জিতুক না কেন, ভারত দেশটা যেন উন্নতি করে। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আছে যারা বিজেপিতে আছে। তাদের মধ্যে একটা অন্যতম নাম হচ্ছে সুকান্তদা। আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ সুকান্ত দাকে শুভেচ্ছা। এই মন থেকে সুকান্ত মজুমদারকে অনেক শুভেচ্ছা রইল। কে জিতবে কে হারবে ৪ তারিখ দেখে নেব।’