লোকসভা নির্বাচনে এখন মাঠে নেমে লড়াই করছেন প্রার্থীরা। দল পাশে থাকলেও লড়াই করতে হচ্ছে প্রার্থীকেই। তাই প্রত্যেকটি বিধানসভা এলাকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন প্রার্থীরা। সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে একটি লোকসভা আসন। তাই বড় জায়গায় একজন প্রার্থীকে প্রচার করতে হয়। আর সেই প্রচার করতে গিয়েই তৃণমূল কংগ্রেসের রানাঘাটের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর রোষানলে পড়লেন বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ। নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে শান্তিপুরে তাঁত কাপড়ের হাটগুলিতে যান মুকুটমণি অধিকারী। সেখানে তাঁতশিল্পী এবং তাঁত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। আর তাঁত শিল্প নিয়ে গত পাঁচ বছরে বিজেপি সাংসদের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন মুকুটমণি।
এদিকে তাঁতশিল্পের একটি পৃথক মর্যাদা রয়েছে শান্তিপুরে। একদিকে এখানকার তাঁতের কাপড় ভিন রাজ্যে এবং বিদেশে যায়। অপরদিকে এখানকার বিপুল পরিমাণ মানুষ এই তাঁতশিল্পের উপর নির্ভরশীল। শান্তিপুরে এসে বহু পর্যটক তাঁতের জামাকাপড় কিনে থাকে। তাই তাঁতের সঙ্গে জড়িত শিল্পী, কারিগর, শ্রমিকদের উন্নয়নে অনেক আগে থেকেই সংগঠন তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তার উপর ভর করেই নানা সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। এবার নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে তাঁত কাপড়ের হাটে যান মুকুটমণি অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিভাস ঘোষ, নরেশলাল সরকার–সহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন: দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যাপক আলোড়ন ছড়াল, গাজীপুরে পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, যন্ত্রচালিত তাঁতের দাপটে এখন শান্তিপুরের হস্তচালিত তাঁত হুমকির মুখে পড়েছে। বিপণনের সমস্যাও বেড়েছে। তাঁতে জিএসটি বসিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এই শিল্পকে সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ। পশ্চিম ভারত থেকে আসা যন্ত্রচালিত তাঁতের কাপড়ের কাছে মার খাচ্ছে বাংলার হস্তচালিত তাঁত। ব্যবসায়ীরা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আর সব শুনে মুকুটমণি বলেন, ‘আগামী দিনে তাঁত শিল্পীদের সমস্যা সমাধান করা হবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই তাঁত শিল্পের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে। বিপণনের জন্য চেষ্টা করেছে। এখানে পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন যিনি তিনি শান্তিপুরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও শান্তিপুর, ফুলিয়া, নবদ্বীপের তাঁত শিল্পের সঙ্কট মেটাতে উদ্যোগী হননি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’
মুকুটমণির কথা কানে গিয়েছে এখানকার বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থীর। সেটা মোটেও ভাল লাগেনি লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে। তাই পাল্টা মন্তব্য করেছেন তিনি। এখানকার স্থানীয় সাংসদ তথা রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, ‘যিনি এই কথা বলছেন তাঁকে বিধায়ক হিসেবে ওই এলাকার মানুষ কতটা পেয়েছেন? তৃণমূল কংগ্রেস তাঁতশিল্পের উন্নয়ন করা মানে তো কাটমানি খাওয়া। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় তাঁত শিল্পীদের প্রশিক্ষণ, ঋণের সুবিধা–সহ নানা প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছি। ওরা কী করেছে বলুক।’