আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও নিজেদের ভুল অবস্থান ঠিক করল না বিজেপি। যে বিজ্ঞাপন দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছিল বিজেপিকে সেই ‘সনাতন বিরোধী তৃণমূল’ বিজ্ঞাপন এখনও চালিয়ে যাচ্ছে বঙ্গ–বিজেপি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এমন বিজ্ঞাপন দিয়েই তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘হেও’ করতে চেয়েছে বিজেপি। এই বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের মামলার ভিত্তিতে কড়া নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, ভোটপ্রচারে এমন বিজ্ঞাপন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া চলবে না। কিন্তু তারপরও আজ দেখা গেল, একই বিজ্ঞাপন জারি রেখেছে বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই বিজ্ঞাপন দেওয়ার জেরে কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিজেপিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু এতটুকু বদলায়নি বিজেপি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। আজ, মঙ্গলবার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দেখা গেল, ‘সনাতন বিরোধী তৃণমূল’ বিজ্ঞাপন চলছে। আর তাই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানো হযেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কাজের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে বিজেপিকে। একাধিক সংবাদমাধ্যমে আগে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী বিজ্ঞাপনের ভাষা নিয়ে আপত্তি তুলে মামলা করা হয়। তাতে কলকাতা হাইকোর্টে এবং সুপ্রিম কোর্ট বিজেপিকে সতর্ক করেছে। নির্বাচন চলা পর্যন্ত এমন কোনও বিজ্ঞাপন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও তা চলছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের সময় ‘পয়সা মন্ত্রী’ বলে তোপ, তৃণমূল কংগ্রেসের তীব্র কটাক্ষ
তাহলে কি এটা আদালত অবমাননার সামিল? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস এখন নির্বাচন কমিশনকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছে। তাতে কেমন কাজ হল দেখে তারপর আবার আদালতে যাবে বলে সূত্রের খবর। এখনও সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট বাকি আছে। প্রচারের এখনও দু’দিন বাকি। সেখানে আজ, মঙ্গলবার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পেজে একটি পোস্ট করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আবার ‘সনাতন বিরোধী’ বলে আক্রমণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এখানে নিশানা করা হয়েছে। আর তাতেই আপত্তি তুলে তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকেছে।
মনে রাখতে হবে এই বিষয়ে যখন মামলা হয়েছিল তখন নির্বাচন কমিশনকেও কথা শুনতে হয়েছিল ভরা এজলাসে। কারণ এটা দেখা নির্বাচন কমিশনের কাজ। সেখানে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কেন পদক্ষেপ করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। এবার যাতে তা তুলতে না পারে সেটা নিয়ে সচেষ্ট নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল কংগ্রেস যে নালিশ ঠুকেছে তাতে দাবি করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টটি মুছে ফেলতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করা হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আরিজ আফতাবকেও চিঠি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।