লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে বাংলায় এখন দেদার কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। রাত পোহালেই পঞ্চম দফার নির্বাচন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিএসএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে এবার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। নির্বাচনের ডিউটি করতে এসে বাংলার মেয়েদের উপর কুস্পর্শ নামিয়ে আনার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। উলুবেড়িয়া লোকসভার কেন্দ্রের এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই ওই জওয়ানকে পুলিশ আটক করলেও তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ পর্যবেক্ষকের কাছে লিখিত নালিশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা প্রশ্ন তোলেন, যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রক্ষক করে বাংলায় পাঠানো হচ্ছে তাঁরাই বাংলার মহিলাদের শ্লীলতাহানি করছেন?
এদিকে অভিযোগ, অভিযুক্ত জওয়ান এক যুবতীকে জোর করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছেন। আতঙ্কে ওই যুবতী চিৎকার করলে এলাকার বাসিন্দারা ছুটে আসেন। হাতেনাতে ওই বিএসএফ জওয়ানকে ধরে ফেলেন। এই বিষয়ে সশী পাঁজা বলেন, ‘রবিবার ভোরে এক যুবতী প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন উলুবেড়িয়ায়। তখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে জওয়ানরা ওখানে ছিলেন, তাঁরা এসে যুবতীকে কুপ্রস্তাব দেন। কুপ্রস্তাব ওই যুবতী প্রত্যাখ্যান করেন। তখন দু’জন সিআইএসএফ জওয়ান তাঁর শ্লীলতাহানি করে। তার গায়ে হাত দেয়, তাঁকে নানাভাবে যৌন স্পর্শ করে।’ শশী পাঁজা এই ঘটনাকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলেছেন। তাই ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চেয়ে পুলিশ পর্যবেক্ষককে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: প্রাতঃভ্রমণের সময় যুবতীকে জোর করে চুম্বন করল বিএসএফ জওয়ান, অভিযোগ দায়ের, উলুবেড়িয়ায় আটক
অন্যদিকে শশী পাঁজা জানান, ওই নির্যাতিতা যুবতী যথেষ্ট সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি এই ঘটনায় চিৎকার করে ওঠেন। সেই চিৎকারে এলাকার মানুষ ছুটে আসেন। ওই যুবতীকে উদ্ধার করা হয়। ওই মহিলা অভিযুক্ত জওয়ানের নামও পড়েছেন। যোগিন্দর পাল নামে ওই জওয়ান শ্লীলতাহানি করেছেন। বিজেপির নেতাদের আক্রমণ করে শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘এই ঘটনা এমন সময়ে ঘটছে যখন বিজেপির নেতারা ক্রমাগত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করছেন। সন্দেশখালির মহিলাদের ধর্ষণের দাম বেঁধে দিচ্ছে বিজেপি।’ এমনিতেই বিএসএফ জওয়ানদের ভারী বুটের টহলদারিতে মানুষজন একটু ভয় পান। সেখানে সরাসরি মহিলাদের উপর যদি এমন আক্রমণ নেমে আসে তাহলে আরও আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: মেট্রোর কাজের জেরে ময়দানে গাছ নিধনের বিকল্প কী? মঙ্গলবার রায়ের সম্ভাবনা কলকাতা হাইকোর্টে
এছাড়া এই ঘটনার খবর যায় উলুবেড়িয়া থানায়। ছুটে তখন ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই ওই জওয়ানকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তারপরই ওই নির্যাতিতা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে মন্ত্রী শশী পাঁজার কথায়, ‘এই কেন্দ্রীয় বাহিনীই আর কয়েক ঘণ্টা পরে উলুবেড়িয়ায় লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দায়িত্ব সামলাবে। তার আগে তারা এভাবে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে।’