এখন লোকসভা নির্বাচনের মরশুম চলছে। ষষ্ঠ দফার নির্বাচন নিয়ে সব রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করেছে। হাতে সময় বলতে আর দু’দিন। তারপরই শুরু হবে ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। আর তার মধ্যেই ২০১০ সালের পর থেকে রাজ্যে যাঁরা ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন সেসব শংসাপত্র আজ, বুধবার বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এই রায় ঘোষণা করতেই তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। গর্জে উঠেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে নয়া তথ্য ফাঁস করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাজ্যে ওবিসি সংরক্ষণ চলছে, চলবে। এভাবে বাতিল করে দেওয়া যায় না। এটা ‘বিজেপির রায়’। এই রায় তিনি মানেন না। তাঁর কথায়, ‘ভদ্রলোককে আমি জাজ হিসাবে সম্মান করি। তবে উনি অনেক কিছুতেই বিখ্যাত। ক’দিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াচ্ছেন, সংরক্ষণ কেড়ে নেবেন। সেটা কখনও হয়? তা হলে তো সংবিধান ভেঙে দিতে হয়। এটা হতে পারে না। এই রায় আমি মানি না। দেশে কখনও ভাগাভাগি হয় না। এটা বাংলার কলঙ্কিত অধ্যায়। হিন্দুকে বাদ দিলাম, মুসলিমকে রাখলাম। এটা হতে পারে? স্পর্ধা তো কম নয়। বিজেপির কোনও পলিসি নিয়ে কথা বলার সাহস আছে?’
এদিকে ২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মূলত কার্যকর হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস আমলে ইস্যু করা ওবিসি শংসাপত্রের উপরেই। এই নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে নতুন তথ্য ফাঁস করেছেন সাকেত গোখলে। তিনি লিখেছেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের রায়ের পিছনে একটি মজাদার বিষয় রয়েছে। যে বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন তিনিই ফৌজদারি অপরাধ থাকা সত্ত্বেও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দিয়ে ছিলেন। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে বলেছিলেন এই বিচারপতি। যা এর আগে কখনও হয়নি। আজকের রায়ও এল লোকসভা নির্বাচনের মাঝখানে। জনগণের রায়ই বলবে যা বলার প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভেসে গেল পার্কস্ট্রিট মেট্রো স্টেশন, জলের তলায় গেল ট্রামলাইন, নাকাল যাত্রীরা
অন্যদিকে এই রায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমরা সমীক্ষা করেছিলাম। উপেন বিশ্বাস চেয়ারম্যান ছিলেন। কোর্টে তখনও কেস হয়েছিল। বিজেপি হেরে গিয়েছিল। এবারও তাই হবে। আমাকে ওরা চেনে না। আমি মাথা নত করার লোক নই। মুসলিমরা কেন তফসিলিদের চাকরিতে ভাগ বসাবে? মোদীবাবু আগুন নিয়ে খেলছেন। তফসিলিদের সংরক্ষণ আপনি বাতিল করতে চাইছেন। এটা হতে পারে না। যত দূর যেতে হবে, যাব। এই রায় মানছি না, মানব না। আইনে বিভেদ হয় না।’ আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘বিজেপির ইস্তেহারেই আছে ভোটের পর ওরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে। এই ভোটে তাদের শিক্ষা দিতে হবে যারা কলকাতা হাইকোর্টের একাংশের মদতে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করতে চাইছে। ক্ষমতায় আসার আগেই এই রূপ, আসার পরে কী হবে, ভাবুন! কুড়মি, ওরাওঁ, সাঁওতাল, সবাইকে সাবধান করছি। বিজেপিকে ভোট দিলে খারাপ সময় আসবে।’