আজ, রবিবার প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই প্রচার তুঙ্গে উঠেছে। কারণ রাত পোহালেই চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ–পর্ব শুরু হবে। এই নির্বাচনে দক্ষিণবঙ্গের আসনগুলি ধরে রাখতে এবং আধিপত্য কায়েম করতে মরিয়া লড়াই করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই জোরদার প্রচার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম একজন শীর্ষনেতা নিজের পার্টি অফিসে বসে ফোন ঘোরাচ্ছেন। দলের যেসব নেতা–কর্মী ‘নিষ্ক্রিয়’ বিশেষ করে জেলা তথা ব্লকের তাঁদের সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন বলে সূত্রের খবর। কাউকে নির্দেশ, কাউকে অনুরোধ করছেন তিনি। একটাই কথা বলছেন–ভোটের ময়দানে নামতে হবে। হ্যাঁ, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
সবার আড়ালে দলের কাজ করে যাচ্ছেন। আসলে জেলাভিত্তিক নেতা–কর্মীরা নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ পান সুব্রত বক্সি। আর তাই ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের পার্টি অফিস থেকে সরাসরি ফোন করতে থাকেন সেইসব নেতা–কর্মীদের। কিন্তু কেন নিষ্ক্রিয় হলেন তাঁরা? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সুব্রত বক্সি পেলেন খানিকটা ক্ষোভ এবং বাকিটা অভিমানের সুর। যোগ্য সম্মান না পাওয়া থেকেই এই ক্ষোভ–অভিমান তৈরি হয়েছে। আর এইসব শুনে বড় দাদার মতো কাছে টেনে নেওয়ার বার্তা দিলেন সুব্রত বক্সি। যাতে অনেকেই ভরসা রাখতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে নালিশ, নির্বাচন কমিশনে চিঠি তৃণমূলের
সোমবার চতুর্থ দফার নির্বাচন হয়ে গেলে আরও তিন দফা নির্বাচন হবে। তাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছেন সুব্রত বক্সি। চতুর্থ দফা পর্যন্ত জেলাগুলিতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু পঞ্চম দফা থেকে সপ্তম দফা পর্যন্ত যেখানে ভোট রয়েছে সেখানে এই নিষ্ক্রিয় নেতা– কর্মীর সংখ্যা বেশি বলে সূত্রের খবর। আর তাই এই জায়গার নেতা–কর্মীদের ফোন করলেন সুব্রত বক্সি। তিনি সরাসরি কথা বলতে ভালবাসেন। ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে কথা বলেন না সুব্রত বক্সি। তাই কর্মীদের কথা শুনে তাঁর নির্দেশ, ‘দলের স্বার্থে সব কিছু ভুলে ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য লড়তে হবে। মনোমালিন্য পরে মেটানো হবে। এবার মার্জিন আরও বাড়াতে হবে। তাই কোনও অজুহাত বরদাস্ত করা যাবে না।’
দেরিতে হলেও দাদার ফোন পেয়ে অনেকে আপ্লুত। ভবানীপুরে রাজ্য সভাপতির দফতরে অনেকেরই যাতায়াত আছে। তাঁরা জানেন, সুব্রত বক্সি সোজা রাস্তায় হাঁটা লোক। হয়তো একটু কড়া কথা বলেন। কিন্তু মনের দিক থেকে একেবারে পরিষ্কার। তাই কাউকে কড়া করে কিছু বললেও সেই নেতা বা কর্মী কিছু মনে করেন না। সেখানে আজ ফোন করে সুব্রত বক্সির কণ্ঠে সেই কড়া ভাব কেউ শুনলেন না। বরং পেলেন আন্তরিক ভালবাসা এবং পরিবারের বড় হিসাবে অনুজদের নির্দেশ দিলেন। পুরনো কর্মীদের ময়দানে নামাতে আজও ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কর্মীরা শুনলেন, বক্সিদা বলছি। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি এই বক্সিদা। দলের কাছে কখনও কোনও দাবি না করে মুখ বুজে কাজ করে গিয়েছেন। তাই আজও তাঁর উপর ভরসা রাখেন সকলেই।