লোকসভা নির্বাচনের শুরু থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ‘চোর’ বলতে শুরু করে বিজেপি। পরিবর্তে তৃণমূল কংগ্রেস উন্নয়নের হিসেব দেখিয়ে ভোট চাইতে শুরু করে। তার মধ্যে বড় ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায় বিজেপির। সন্দেশখালি ইস্যুতে পর পর দুটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই হাওয়া ঘুরে যায়। অস্বস্তিতে পড়ে যায় বিজেপি। এই আবহে পঞ্চম দফার নির্বাচনের আগে আর কোনও আক্রমণ বরদাস্ত করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তিনি মানহানির মামলা করবেন বলে উল্লেখ করলেন। তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলে বিরোধীরা যে বারবার আক্রমণ করে থাকেন সেটা নিয়েই এবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রীরামপুরের সভা থেকে সোমবার মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিকে আজই বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা জামিন পেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে জামিন দিয়েছে। আর গ্রেফতার হয়েছেন বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি দাস। তাঁকে সন্দেশখালিতে মহিলাদের নামে ভুয়ো ধর্ষণ মামলা করার অভিযোগে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলা হবে কেন? উঠেছে প্রশ্ন। তাই আজ শ্রীরামপুরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রোজ বলছে তৃণমূল চোর! কার পকেটে চুরি করেছে জিজ্ঞেস করুন। একটা হাওয়া তুলে দিয়েছে। চুরিটা করেছে, প্রমাণটা কোথায়? আমি যাচ্ছি মানহানির মামলা করতে। রোজ সংবাদমাধ্যমে উল্টোপাল্টা বলা! আমি নিজে মামলা করতে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি কাণ্ডে নয়া মোড়, বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাসকে জেল হেফাজতের নির্দেশ
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য আসলে অলআউট খেলার সামিল। এখন তিনি বুঝে গিয়েছেন বিজেপি নোংরা রাজনীতি করা ছাড়া জেতা অসম্ভব নির্বাচনে। তাই বিজেপির সমস্ত ষড়যন্ত্র ছিন্ন করতে এবার আদালতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি এবার আর ছাড়ার পাত্রী নই। আমি ধরব, ভাল করে আঁটোসাঁটো করে ধরব। আমার নামে কোনও প্রমাণ নেই, তথ্য নেই। জীবনে একটা চা কারও কাছ থেকে খাইনি। আমাকে বলছে চোর! আমি তো কোর্টে যাচ্ছি, মানহানির মামলা করব। আমি এবার ছাড়বার পাত্রী নই। রোজ খবরের কাগজে মিথ্যে কথা বলছে।’
এছাড়া রাজ্যবাসীর জন্য নানা সামাজিক প্রকল্প এনেছেন তিনি। আর সরাসরি গরিব মানুষের হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। সেখানে তাঁকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ এবং তাঁর সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে বিজেপি। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এটা আমাদের কর্তব্য। তবে তার জন্য আপনাদেরই কৃতিত্ব দিতে হবে। আপনারা আমাদের সুযোগ দিয়েছেন কাজ করার। কথা না রাখতে পারার থেকে মৃত্যু ভাল। কল্যাণকে জেতাবেন, গলার জোর দেখেছেন তো? বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে হারছে। কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকেও শূন্য। বাংলাতেও শূন্য। দিল্লি, পঞ্জাবেও হারছে। ভোটটা তাহলে পাবে কোথা থেকে? আকাশ থেকে পড়বে? কাজ করতে হয়। কোনও কাজ করেনি। তাই বিজেপির শোচনীয় পরাজয় হবেই। ২০০৪ সালে কেউ ভাবেনি অটলজি হেরে যাবেন। কিন্তু তাঁকে হারতে হয়েছিল। কারণ, মানুষ হারিয়ে দিয়েছিল।’