আজ, শনিবার দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। উৎসবের মেজাজে ভোট চলছে সর্বত্র। বাংলায় যেমন ভোট চলছে তেমন অন্য রাজ্যে ভোট চলছে। এই আবহের মধ্যেই আজ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, কাঁথি, মেদিনীপুর, তমলুক, ঘাটাল এবং বিষ্ণুপুরে ভোট শুরু হয়ে গিয়েছে। তার প্রাক্কালে ফের সাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সেতু হয়ে গেলে বিপুল মানুষের উপকার হবে। যাতায়াত করতে যে সমস্যায় পড়তে হয় মানুষজনকে তা অচিরেই মিটবে। এখন নির্বাচন চলছে। তাই কাজ করা যাচ্ছে না। নির্বাচন মিটলেই কাজ শুরু হবে বলে সূত্রের খবর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা দেখে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে ট্রলারে করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী–সমর্থকরা ঘোড়ামারা যাচ্ছিলেন। তাঁদের ট্রলার আটকে পড়ে। এই খবর পেয়ে কচুবেড়িয়া ঘাটে পৌঁছন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, সাগর থানার ওসি শুভেন্দু দাস, সাগরের বিডিও কানাইয়াকুমার রায়। তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানীয় জল ও শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। পরে বাড়তি তিনটি ট্রলার সকলকে উদ্ধার করে ঘোড়ামারা দ্বীপে পৌঁছে দেয়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদারের সমর্থনে সভা করার সময় বলেন, ‘গঙ্গাসাগরে যা যা করার দরকার ছিল, করে দিয়েছি। বাকি শুধু মুড়িগঙ্গা নদীতে সেতু। একটু সময় লাগবে। সেতু তৈরির জন্য সার্ভে হয়ে গিয়েছে। আশা করি, আগামী দু’তিন বছরের মধ্যে সেতু তৈরি হয়ে যাবে। আপনাদের আর অসুবিধা হবে না।’
আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের জেরেই ছাত্রমৃত্যু ঘটে, কর্মসমিতির বৈঠকে শাস্তিতে সিলমোহর
এই সেতু তৈরির জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সে কথাও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘এই সেতু নির্মাণের জন্য বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু তাঁরা কোনও সাড়াশব্দ করেনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে সেতু তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছি’। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে চিকিৎসার জন্য রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া যাবে। সাগরদ্বীপে তিন লক্ষ মানুষের বাস। রোজ নানা কারণে তাঁদের মুড়িগঙ্গা নদী পার করতে হয়। প্রচুর পুণ্যার্থীরা আসেন। কাকদ্বীপ থেকে সাগর পর্যন্ত মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে চার লেনের সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। তাতে উপকার হবে মানুষের।
একুশে নির্বাচনে গঙ্গাসাগরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এসে এখানে নানা কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর আর কোনও উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি। তাই গঙ্গাসাগর মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা নিয়ে শুক্রবার মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘গঙ্গাসাগর মেলায় সারা বিশ্ব থেকে লোক আসেন। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত এক টাকাও দেয়নি। এই মেলাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করা উচিত। তাও করেনি। আমরা সুন্দরবন জেলার জন্য একটা নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছি। কারণ সুন্দরবন জেলা ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। আমরা দু’কোটি ম্যানগ্রোভ এখানে লাগিয়েছি, যাতে পাড় ভেঙে না যায়। সমুদ্রসাথীতে কেউ যদি বাদ পড়ে থাকেন, দয়া করে তাঁদের নাম ভোটের পরে লেখাবেন। ভোটের পরে লেখালেও আপনি টাকা পাবেন।’