উদ্বাস্তু কলোনিতে নির্মাণ বন্ধ রাখতে হবে। এবার নোটিশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু যে বিষয়টি চমকে দেওয়ার মতো সেটা হল স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে না জানিয়েই এই নোটিশ জারি করা হয়েছে। আর সেটা নিজে মুখেই জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কারণ এই কাজটি করেছে ভূমি দফতর। রাজ্যের এই ভূমি দফতর মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়েরই অধীনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর মতামত ছাড়াই এমন বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেল কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন। আর এই ঘটনার কথা পরে জানতে পেরে বেজায় চটেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচন শেষ হলেই এই নোটিশ বাতিল করবেন তিনি। তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত একাধিক বিধানসভায় প্রচুর উদ্বাস্তু কলোনি আছে। এমনকী সেখানে ৭৫ বছরের পুরনো বেশ কয়েকটি উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। সুতরাং সেগুলি সংস্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু এই কলোনিতেই নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে রবিবার যাদবপুরের বারোভূতের মাঠে অভিযোগ জানান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘কিছু দুষ্টু লোক একটু দুষ্টুমি করছে। আমার কাছে খবর এসেছে, কোনও একটা জায়গা থেকে উদ্বাস্তু কলোনিগুলির কাছে নোটিশ গিয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে, আপনারা একতলা, দোতলা, তিনতলা, চারতলা বাড়ির কাজ সব স্টপ করে দিন। আমি বলছি, নির্বাচনের পর এই নোটিশ আমি ক্যানসেল করে দেব। আমিই জানি না, বাবুরা নোটিশ দিয়ে বসে আছে! এর পাল্টা নোটিস কী দিতে হয় সেটা আমি দেখাব ভাল করে।’
আরও পড়ুন: শাহজাহানের বিরুদ্ধে আজ চার্জশিট জমা পড়ল আদালতে, দুর্নীতির অভিযোগ ইডির
কিছুদিন আগে ভূমি দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলোনির জমিতে নির্মাণ বহুদিন ধরেই হচ্ছে। কিন্তু গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার পর কলকাতায় আপাতত বহুতল নির্মাণে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু গার্ডেনরিচ উদ্বাস্তু এলাকা নয়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দিষ্টভাবে উদ্বাস্তু কলোনির কথাই বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘এই সব সিদ্ধান্ত নিতে গেলে আমার সঙ্গে কথা বলে নিতে হয়। আমি মনে করি না এটা ববিও জানে। কারণ এটা কলকাতার মেয়রের আওতায় নয়। এটা ভূমি দফতরের আওতায়। আমি নিজে ভূমি দফতর দেখি। সিপিএমের কোনও অফিসার এটা করেছেন। আমি তাঁর বিষদাঁত ভেঙে দেবো।’
ভূমি দফরের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী নানা অভিযোগ আগে তুলেছেন। এবার তাঁকে না জানিয়ে নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। যা ভয়ঙ্কর অভিযোগ বলে মনে করছেন নবান্নের কর্তারা। উদ্বাস্তু কলোনিগুলিতে পাট্টা দেওয়ার কাজ বহুদিন ধরেই চলছে। সেই জমিতে অনেকেই নির্মাণ করছেন। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমি উদ্বাস্তু কলোনির ৯৯ শতাংশে পাট্টা দিয়েছি। শুধু আপনারা যখন বাড়ি ঘর করবেন, একটু প্ল্যানিং দেখে করবেন। যাতে বাড়ি ঘর ভেঙে না পড়ে। এটা আপনাদের সকলের দায়িত্ব।’