জবাব এবার রোড–শোয়ে। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বদলে গেল সেই ছবিটা। মঙ্গলবার দিন উত্তর কলকাতায় বিজেপির প্রার্থী তাপস রায়ের সমর্থনে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে স্বামী বিবেকানন্দর বাড়ি পর্যন্ত রোড–শো করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর ঠিক তারপরই আজ, বুধবার দুপুরে ওই একই পথে রোড–শো করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তফাতটা তাহলে কোথায়? এবার সেটাই দেখল গোটা বাংলা। যা বাংলার মানুষ মনে রাখবেন। তফাতটা দেখা গেল, হুডখোলা জিপে রোড–শো করেন প্রধানমন্ত্রী। আর বুধবার দুপুরে পায়ে হেঁটে শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি পর্যন্ত রোড–শো করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্যামবাজারের রাস্তা থেকে সিমলা স্ট্রিট পর্যন্ত মানুষের উচ্ছ্বাসের ছবি ধরা পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড–শো’তে।
এদিকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮ মে আরামবাগের গোঘাটের নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি আইডেন্টিফাই করেছি কে কে করেছেন। আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণ মিশন আছে। আমি রামকৃষ্ণ মিশনকে কি হেল্প করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল তখন কিন্তু আমি পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম। মা–বোনেরা আসত। তারা তরকারি কেটে দিত। সিপিএম কিন্তু আপনাদের কাজ করতে দিত না।’ সেখানেই সমালোচনা করেছিলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সাধু কার্তিক মহারাজ এবং ইস্কনের ভূমিকার।
আরও পড়ুন: আবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বদল, ৬ মাসের মাথায় নতুন দায়িত্বে এলেন কে?
অন্যদিকে এটা নিয়েই বিজেপি রাজনীতি করতে নেমে পড়ে। এই মন্তব্যে জোর বিতর্ক শুরু হয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। আর আজ, বুধবারই রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠানে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাস্তার দু’ধারে তখন কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। মানুষের জমায়েতে রাস্তা তখন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। ট্রাম লাইনের উপরে হনহনিয়ে হেঁটে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণে রাস্তার দু’ধারে ব্যারিকেড তৈরি করে দেওয়া হয়। সেই ব্যারিকেড টপকে অনেককে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চলে আসতে দেখা যায়।
আর স্বামীজীর বাড়িতে পা রেখে তাঁর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বামীজির বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা দেন রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনিই আমাদের ভরসা। সংঘের অবস্থা ভাল নয়। স্বামীজির বাড়ির চারপাশে সৌন্দর্যায়ন ও মিউজিয়ামের জন্য যদি আর্থিক সাহায্য করেন, তাহলে ভাল হয়।’ সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানিয়ে দেন, ‘আমি আপনাদের পাশে আছি।’