শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা এগিয়ে রয়েছেন? এই প্রশ্ন এখন সেখানে উঠতে শুরু করেছে। কারণ মকপোলিং ও কমিশনিং চলাকালীন ইভিএমের ব্যালট ইউনিট চুরির অভিযোগ উঠল বিজেপির এজেন্টের বিরুদ্ধে। বিজেপির এই এজেন্ট বুঝতে পেরেছিলেন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তরতর করে এগিয়ে চলেছেন। আর সেটা ঠেকাতেই এই চুরি। তার জেরে গ্রেফতার হয়েছেন ওই বিজেপির এজেন্ট। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে হুগলির শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপিকে জোরদার খোঁচা দিয়েছেন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এখানে বামেদের প্রার্থী দীপ্সিতা ধরকে দাঁড় করালেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে পিছনে ফেলে এগিয়ে আছেন সেটা এই ঘটনাই স্পষ্ট প্রমাণ দিচ্ছে। বিজেপি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নামক নির্বাচনী ঝড় ঠেকাতে তাঁর প্রাক্তন জামাই কবির শংকর বোসকে প্রার্থী করেছে। কিন্তু বিজেপির কাছে এখনই পৌঁছে গিয়েছে গ্রাউন্ড রিয়েলিটির খবর। তাতে এই আসন জেতা বিজেপির পক্ষে অসম্ভব বলে সূত্রের খবর। আর তাই হুগলির জনাই ট্রেনিং স্কুল চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করে নির্বাচন কমিশন। তারপরই এক ব্যক্তিকে আটক করে চন্ডিতলা থানার পুলিশ। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম অরূপ কুমার মালিক। তিনি বিজেপির এজেন্ট।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের নয়া উদ্যোগ, একশো ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাদের আর্থিক সাহায্য, বিতর্ক থামবে?
বিজেপির যেটুকু ভোট শ্রীরামপুরে আছে সেখানে থাবা বসাবে বাম প্রার্থী। সুতরাং ভোট ব্যাঙ্ক অটুট থাকবে তৃণমূল কংগ্রেসের। এই তত্ত্বই বুঝে গিয়েছে বিজেপি। কারণ একদা বামেদের ভোটব্যাঙ্কই ট্রান্সফার হয়েছিল বিজেপিতে। এবার বামেরা তা ফেরত চায়। আর তাই অগত্যা চুরি। সূত্রের খবর, সোমবার চন্ডীতলার জনাই ট্রেনিং স্কুলে শ্রীরামপুর লোকসভার অন্তর্গত দুটি বিধানসভা, চন্ডীতলা এবং জাঙ্গীপাড়ার ইভিএম কমিশনিং চলছিল। আর তখন মকপোল চলাকালীন বিজেপির এজেন্ট অরূপ কুমার মালিক ইভিএমের ব্যালট ইউনিট চুরি করে পালানোর চেষ্টা করেন। মেশিন গোনার সময় তা ধরা পড়ে যায়। সিসিটিভি দেখে বিজেপি এজেন্টকে চিহ্নিত করেন নির্বাচন কমিশনের অফিসাররা। চন্ডীতলা থানার পুলিশকে খবর দিয়ে বিজেপি এজেন্টকে ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ব্যাপক চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। আর সেখানে এখনই হাসতে শুরু করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিসেব কষে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি গোটা দেশে ১৯৫টি আসন পাবে। সরকার গড়তে পারবে না। কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠন হবে। বাংলায় বিজেপি গোহারা হারবে। তারপরই এমন ঘটনা সামনে আসে। শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবির শংকর বোস এই চুরির ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব। আজ আমার প্রচার ছিল চন্ডীতলায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমি তাঁকে হোমিওপ্যাথি ওষুধ দিতে রাজি আছি।’ আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির এটাই চরিত্র। এখন থেকেই ব্যালট লুট করছে। ভোটের দিন শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থীরা গুন্ডা বাহিনী তৈরি নামাবে। কারণ চুরি জোচ্চুরি করা ছাড়া বিজেপির জেতা মুশকিল।’