লোকসভা নির্বাচনে হারলেও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে এই মুহূর্তে থেকে যাচ্ছেন অধীর চৌধুরীই। এই খবর মিলেছে কংগ্রেসের অন্দর থেকে। ২০১৯ সালের তুলনায় দেশে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা অনেক বাড়লেও মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ–সহ কয়েকটি রাজ্যে কংগ্রেসের বিপর্যয় অব্যাহতই রয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই রাজ্যগুলিতে কংগ্রেসের খারাপ ফলাফল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে এআইসিসি’র বিশেষ টিম যাবে। তাতে বর্ষীয়ান নেতারা থাকবেন। বাংলাতেও এই টিম আসবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকে।
কংগ্রেস বাংলায় একটি লোকসভা আসন জিতেছে। সুতরাং ফলাফল অত্যন্ত খারাপ। অধীর চৌধুরী নিজেই হেরেছেন বহরমপুর থেকে। বামেদের সঙ্গে জোট করেও ভরাডুবি ঠেকানো যায়নি। তাই এখন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য, জেলা সভাপতি, শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব এবং বিধানভবনের নানা স্তরের নেতার সঙ্গে কথা বলে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে সার্বিক রিপোর্ট মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধীদের কাছে জমা দেবে এই টিম। এমনকী এআইসিসি’র পক্ষ থেকে বাংলার ইনচার্জ গুলাম মিও নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে রিপোর্ট দেবেন। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘হাফ প্যান্ট পরা মন্ত্রী’, বাংলা থেকে দু’জন এনডিএ সরকারের প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় খোঁচা ডেরেকের
ইউসুফ পাঠানের কাছে বহরমপুরে নিজের গড়ে পরাজিত হওয়ার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন অধীর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বলেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, আমার বদলে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। আমি তো হারলাম। আমি চাই, পর্যালোচনা হোক। আমার থেকে যোগ্য ব্যক্তিকে খোঁজা হোক।’ মুখে এই কথা বললেও এখন রাজনীতি ছাড়ছেন না অধীর। নির্বাচনের সময় বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস তাঁকে হারাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। মাঠে গিয়ে বাদাম বেচবেন। এখন বলছেন, রাজনীতি ছাড়া আর কিছু করতে তিনি শেখেননি। এখন নয়াদিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি।
তবে অধীর এখনও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদত্যাগপত্র কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে পাঠাননি। টানা পাঁচবারের সাংসদ হওয়ায় নয়াদিল্লিতে অধীর সরকারি বাংলো পেতেন। সেই বাংলো এবার ছেড়ে দিতে হবে। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা থাকায় এতদিন অধীর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও পেতেন। সেটা এখন কি হবে দেখার বিষয়। তৃণমূল কংগ্রেস এখন ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কিন্তু অধীর চৌধুরী তীব্র তৃণমূল বিরোধী বলেই পরিচিত। সেই মনোভাবের পরিবর্তন হয় কিনা সেটাও দেখার বিষয়। বহরমপুরে অধীরের বিপর্যয়ের পরেই কংগ্রেসকে রাজ্যে একগুচ্ছ বিধানসভার উপনির্বাচনের মুখোমুখি হতে হবে। সেটাও কেমন হয় দেখার বিষয়।