কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হয়নি। হতে চলেছে এনডিএ সরকার। যার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। বাংলাতেও তৃণমূল কংগ্রেস জিতে নিয়েছে ২৯টি লোকসভা আসন। ফলে ভোট এখানেই শেষ। কিন্তু বাংলার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে মহুয়া মৈত্রর মানে দাঁড়াতে পারেনি রানিমা। অমৃতা রায়কে প্রার্থী করে বাংলার মাটিতে পদ্ম ফোটাতে চেয়েছিল বিজেপি। রাজপরিবারের সদস্যকে দিয়ে বাজিমাত করতে গিয়ে কুপোকাত হয়েছে গেরুয়া শিবির। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ভোটাররা আস্থা রেখেছেন মহুয়ার উপর। কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের কাছে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন অমৃতা রায়। আর হেরে গিয়েই রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করলেন কৃষ্ণনগরের ‘রানিমা’ অমৃতা রায়।
এদিকে হেরে যাওয়ার পর তাঁর উপলব্ধি, অন্যের কথা শুনে ‘ভুল হয়েছে’। নিজের পরিকল্পনা মতো চললে লোকসভা নির্বাচনে আরও ভাল ফল হতো বলে মনে করেন তিনি। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে অমৃতা রায় বলেন, ‘এর পরে যদি রাজনীতি করি, নিজের বুদ্ধিতেই চলব। অন্যের কথায় নয়। এই পরাজয় মানতে পারছি না। ওরা যেমন বলেছে, তেমনই করেছি। সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচার করেছি। যেখানে বলেছে, সেখানে গিয়েছি। অন্যের বুদ্ধিতে চলেছি। নিজের বুদ্ধিতে চললে এর চেয়ে ভাল ফল করতাম।’ দু’বার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রচারে আসেন নরেন্দ্র মোদী। প্রচারে আসেন অমিত শাহও। মোদী তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। কিন্তু কৃষ্ণনগরের ফলাফলে বদল ঘটেনি।
আরও পড়ুন: বাংলার মহিলাদের ‘ভিখিরি’ বলে আক্রমণ সিপিএমের, রাজ্যজুড়ে তোপের মুখে লালপার্টি
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস বাংলায় ২৯টি আসন পেয়েছে। আর বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। ২০১৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২২টি আসন। আর বিজেপি পেয়েছিল ১৮টি আসন। এবারও তেমন হবে ভেবেছিলেন বিজেপির নেতারা। কিন্তু সেটা বাস্তবে ঘটেনি। বরং দু’জন মন্ত্রী হেরেছেন বাংলায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন অমৃতা রায়। তাঁকে কৃষ্ণনগর আসনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। বিজেপির যুক্তি ছিল, রাজবধূকে ভোটারদের কাছে নতুন করে পরিচয় করাতে হবে না। তাঁকে সকলেই চেনেন। এই ফলের পর রানিমার ঘনিষ্ঠদের দাবি, ‘বিজেপি ঠকিয়েছে রানিমাকে। রানিমার ভাবমূর্তি, রাজবাড়ির নামে রানিমাকে রাস্তায় নামিয়ে ঘুরিয়েছেন। কিন্তু এখানে বিজেপি নেতারা নিজেরা দুর্নীতি করেছেন।’
এছাড়া এবার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। বারবার টাকার হিসাব চাওয়া হলেও কেউ হিসাব দেয়নি। সই করিয়ে চেকবুক নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পাশ বইও রানিমার কাছে ছিল না। টাকা পয়সা সরানোর বিষয়টি বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমজুদারকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। আর অমৃতা রায়ের কথায়, ‘রাজনীতি করলে নিজের বুদ্ধিতেই করব। এবার কলকাতা যাব। সব কিছু ঠিকঠাক হলে সকলের সঙ্গে কথা বলব।’