লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সেক্ষেত্রে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে। কিন্তু শরিকদের সহায়তায় তৈরি হচ্ছে এনডিএ সরকার। এখন আর এটা বিজেপি বা মোদী সরকার বলা যাবে না। সারা দেশেই ফল খারাপ হয়েছে বিজেপির। কিন্তু এই আবহে আজ, রবিবার সন্ধ্যায় শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। আর বাংলা থেকে বিরাট আশা বিজেপি করলেও ১২টি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। তবে যেহেতু মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর দ্বিতীয়বার বনগাঁ আসনটি ধরে রাখলেন তাঁকে মন্ত্রী করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। শান্তনু আগেও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এবারের লোকসভা নির্বাচন খুব হাইভোল্টেজ ছিল। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক ঝড়ে ২৯টি আসন তাদের দখলে আসে। এমন আবহে অনেকেই হেরে গেলেও শান্তনু ঠাকুর নিজের আসন বনগাঁ ধরে রাখলেন ভালভাবেই। মতুয়াদের আশীর্বাদ রয়েছে তাঁর সঙ্গে। বিজেপিও মনে করে মতুয়াদের ভোটব্যাঙ্ক শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গেই রয়েছে। তাই তাঁকে আবার মন্ত্রী করা হচ্ছে। যাতে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট থাকে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ রয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর কাছ থেকেই সঙ্ঘাধিপতির পদ ছিনিয়ে নেন শান্তনু বলে অভিযোগ। অন্যান্য হিন্দু দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে তফসিলি জাতি ভাগ করা আছে। মতুয়ারা তাঁর মধ্যে পড়েন। মতুয়াদের নিয়েই একটি ধর্মীয় শাখা গড়ে তোলেন সমাজসংস্কারক হরিচাঁদ ঠাকুর।
আরও পড়ুন: যুবতীর দু’টুকরো দেহ উদ্ধার ট্রেন থেকে, দুটি ব্যাগে করে রাখা হয় দেহাংশ, তদন্তে পুলিশ
এঁরা মন্দিরে বিষ্ণুর পুজো করে থাকেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে মতুয়ারা চলে আসেন ভারতে। তখন থেকেই এখানে থাকা হয়। এদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সিএএ, এনআরসি করার কথা ভাবে। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে সিএএ কার্যকর হয়ে গিয়েছে। এই ইস্যুকে সামনে রেখেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি। আর শান্তনু ঠাকুর জিতে মন্ত্রী হন। এই সিএএ, এনআরসি নিয়ে বিরোধিতা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মতুয়াদের জনগণনা কখনও হয়নি। তবে এই সম্প্রদায়ের দাবি সারা ভারতজুড়ে ১০ লক্ষ মতুয়া আছে। একুশের নির্বাচনেও দেখা যায়, মতুয়া অধ্যুষিত একাধিক জেলা থেকে ভোট পেয়েছে বিজেপি। তারপরই মন্ত্রী করা হয় শান্তনুকে।
আগে শান্তনু ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। এবার হতে পারেন পূর্ণমন্ত্রী। শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে আজ আসেন দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি আসার একটু পরেই শান্তনু ঠাকুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। তাছাড়া শান্তনু ঠাকুর কোন মন্ত্রী হন সেটাও দেখার বিষয়। এবার হুগলি, কোচবিহার, বর্ধমান–দুর্গাপুর, বাঁকুড়া বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে বনগাঁ বুক পেতে আগলে রাখেন শান্তনু ঠাকুর। তারই পুরষ্কার বাবদ আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছেন শান্তনু ঠাকুর। এমনকী সিএএ’র বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক। তারপর নিজের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন শান্তনু। তবে সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন।