লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়ে ফলাফল প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে ঘাসফুল ঝড় অব্যাহত বাংলায়। বিজেপির জায়গা যে বাংলা নয় তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচন, পুরসভা নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন প্রমাণ করেছে বাংলার মানুষ দিদির গ্যারেন্টিতেই ভরসা রাখছেন। এখানে মোদীর গ্যারেন্টি বা ম্যাজিক কোনওটিই কাজ করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুগলবন্দীতে বাংলায় বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই আবহে গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। কেষ্টহীন এই প্রথম লোকসভা নির্বাচনে দুটি আসনই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে গিয়েছে। ব্যবধান বাড়িয়ে চতুর্থবার জয়ী হন শতাব্দী রায়। আর আজ, বুধবার সকালে তারাপীঠে পুজো দিলেন। তিহাড় জেলে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশও করলেন তিনি।
এখানে বীরভূমে শতাব্দী রায় এবং বোলপুরে অসিত মাল জিতেছেন। বীরভূমে গিয়ে মাটি আঁকড়ে পড়েছিলেন শতাব্দী রায়। তীব্র গরমের মধ্যেও কোমর বেঁধে প্রচার করেছিলেন। গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে করেন জনসংযোগ। পরিশ্রমের ফল ভালরকম পেয়েছেন শতাব্দী রায়। লক্ষাধিক ভোট ব্যবধান বাড়িয়ে জিতেছেন তিনি। আর আজ, বুধবার তারাপীঠে পুজো দিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি তারা মায়ের আশীর্বাদ আছে। আর তাই পর পর কয়েকটা বছর বীরভূমে কাটাতে পারলাম। প্রত্যেক কর্মী খুব পরিশ্রম করেছেন। আবেগের সঙ্গে ভোট করেছেন কর্মীরা। তাই এই ফল। আবারও নতুন করে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বীরভূমবাসীকে।’
আরও পড়ুন: ইডির ডাকে সাড়া দিলেন না অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা, রেশন দুর্নীতি মামলায় চাইলেন আরও সময়
কেষ্ট অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল না থাকায় বিজেপি এই আসনে পদ্ম ফোটাবে ভেবেছিল। তাই খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বীরভূমে নিয়ে এসে প্রচার করানো হয়। কিন্তু কেষ্টর গড় এখনও তেমনই রয়ে গিয়েছে। তাঁর সাজানো সংগঠনেই খেলে বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মাঝে শুধু একটু ঠিকঠাক করতে হয়েছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কাজল শেখ নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন বীরভূমের মাটিতে বিজেপির জায়গা নেই। তবে ভোট প্রচারের মুখে কয়েকবার ক্ষোভের মুখে পড়েছেন শতাব্দী। এই নিয়ে শতাব্দীর বক্তব্য, ‘কিছু গ্রামে এখনও ছোট ছোট কাজ বাকি আছে। জলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেছি। জলস্তর গরমে নিচে নেমে গিয়েছে। সেটা মেটানোর চেষ্টা করব।’
কিন্তু কেষ্টকে কি ভুলে গেলেন শতাব্দী? না, কেষ্টকে ভোলেননি শতাব্দী রায়। তাই তো নয়াদিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তিনি। প্রায় দু’বছর হল বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে গরু পাচার মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করে নিয়ে যায় অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টকে। তারপর থেকে প্রভাবশালী বলে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারে এসে বলেছিলেন, লোকসভা নির্বাচন মিটে গেলে ছাড়া পাবেন কেষ্ট। তাই হয়তো দেখা করতে যাচ্ছেন শতাব্দী। তাঁর কথায়, ‘এবার একসময়ের সতীর্থ কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে তিহাড়ে যাব।’