নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর আসনটি তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরে গিয়েছে বিজেপি। এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির গৃহবধূ অমৃতা রায় বিজেপি টিকিটে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মহুয়া মৈত্র। সমানে সমানে টক্কর দিয়ে আসনটি ধরে রাখেন মহুয়া মৈত্র। আর এই আসন জিতেই অতীতের জবাব এখন দিলেন মহুয়া বিজেপিকে। আর অমৃতা রায় হারতেই একে ওপরের বিরুদ্ধে দোষারোপের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্দরে। জেলা সংগঠনের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। এমনকী টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং বিজেপির পরাজিত প্রার্থী।
এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। আর এমন অভিযোগের জেরে কৃষ্ণনগরে নদিয়া উত্তর বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয় একদল বিজেপি কর্মীরা। এখানেই শেষ নয়, বিজেপি অফিসে তালা লাগিয়ে মিছিল করে বিক্ষোভও দেখান বিজেপির একাংশ নেতা–কর্মীরা। ওই বিজেপি নেতা–কর্মীদের অভিযোগ, নদিয়া উত্তরের জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস এবং রাজ্য বিজেপি নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করে বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে হারিয়ে দিয়েছে। বিনিময়ে তাঁরা মোটা টাকা পেয়েছেন। দলীয় নেতৃত্বের একাংশ প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেছে।
আরও পড়ুন: রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়–মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে কেন চিন্তায় ছিলেন তৃণমূলনেত্রী? জানালেন বৈঠকে
এদিকে অমৃতা রায় নিজেই অভিযোগ করেছেন, তাঁকে দিয়ে চেক বইয়ে সই করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। যার কোনও হিসাবও তাঁকে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগের পরই বিজেপি অফিসে তালা পড়ে। আর মিছিল করে জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের পদত্যাগ দাবি করা হয়। যদিও নদিয়া উত্তরের জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘এসবের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে কিনা সেটা আমি বলতে পারব না। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন কিষান মোর্চার সভাপতি মহাদেব সরকার। এঁদের কাউকে নির্বাচনের ময়দানে দেখা যায়নি। এঁরা যদি সত্যিই বিজেপির কার্যকর্তা হতো, তাহলে নির্বাচনের সময় একদিন হলেও দেখা যেত। কিন্তু এঁদের একদিনও দেখা যায়নি।’
অন্যদিকে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলেছেন অমৃতা রায়। তিনি বলেছেন, ‘আমার নামে প্রচুর টাকা এসেছিল। সেটা আমি জানি। কিন্তু সেটা ভুলভাবে খরচ করা হয়েছে। তা না হলে ফলাফল ভাল হতো। ওদের কথা শুনেই এই হাল হল। নিজের বুদ্ধিতে চললে এমন হতো না। আমাকে কিছুই জানানো হতো না। আমার পাসবুক, চেকবুক জেলা নেতৃত্বের কাছে আছে।’ এই অভিযোগের পালটা জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘রাজ মাতা কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।’