লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কিন্তু বাকি শরিকদের সমর্থনে এনডিএ সরকার গড়ে উঠবে। এটা সত্যিই প্রকৃত এনডিএ সরকার। কারণ বিজেপি এখন সংখ্যালঘু। এই আবহে বাংলার দিকে তাকালে বিজেপি জিতেছে ১২টি আসন। আগের বারের থেকে ৬টি আসন কমেছে। আর এই আবহে বাংলায় সিপিএমের হাল কেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এক্সিট পোল বা বুথফেরত সমীক্ষা মিলে গিয়েছে। সিপিএম একটি আসনও পায়নি। এবার শুধু বিষয়টি সেখানেই থেমে নেই। বরং বিপুল পরিমাণ সিপিএম প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে বলে তথ্য সামনে এসেছে। তাতে এটা যে রাজনৈতিক প্রত্যাখ্যান তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না।
এদিকে নিজেদের ধ্যানধারণা ভেঙে এবার বেশিরভাগ আসনে তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু তাও ‘লালের হাল’ ফিরল না। বরং আরও রাজনৈতিকভাবে দুমড়ে মুচড়ে গেল বঙ্গ–সিপিএম। গেরুয়া আগ্রাসনকে উড়িয়ে বাংলার হাল ফিরল ঠিকই, তবে দিদির হাত ধরে। ভোটপ্রাপ্তির হারে বামেদের রক্তক্ষরণ ঠেকানো গেল না। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে ৩০টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। তবে এই তরুণ মুখের জন্যই মুজফফর আহমেদ ভবনকে গুণতে হবে লক্ষাধিক টাকা। কারণ জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে তরুণ প্রার্থীদের। সিপিএমের দুই ‘পক্ককেশধারী’ নেতাই জামানত রক্ষা করতে পারলেন। মুর্শিদাবাদের মহম্মদ সেলিম ও দমদমের সুজন চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: শুভেন্দু–সুকান্তকে ডেকে পাঠাল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, যাবেন জয়ী সাংসদরাও
অন্যদিকে বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে ২৩টি আসনে প্রার্থী দেয় সিপিএম। বামফ্রন্টের শরিক দলগুলি প্রার্থী দিয়েছিল ৭টি আসনে। ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, বাংলায় সিপিএমের ২৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ২১ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ৬ ভাগের এক ভাগ ভোট পেলে সেই প্রার্থীর জামানত থাকে। অর্থাৎ মোট ভোটের ১৬.৬৬ শতাংশের কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে নির্বাচন কমিশনে নির্দিষ্ট অর্থ জমা রাখতে হয়। লোকসভা নির্বাচনে সেই টাকার অঙ্ক ২৫ হাজার টাকা। জামানত বাজেয়াপ্ত হলে সেই টাকা আর ফেরত মেলে না। সুতরাং হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, সিপিএমের ২১ জন প্রার্থীর জন্য ৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা লোকসানে গেল।
এছাড়া একমাত্র সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মুর্শিদাবাদ লোকসভায় দ্বিতীয় হতে পেরেছেন। তিনি পেয়েছেন ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ২২৭টি ভোট, ৩৩.৬২ শতাংশ। আর সুজন চক্রবর্তী পেলেন ১৯.১১ শতাংশ ভোট। আর জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার তালিকায় রয়েছেন— তমলুকের সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্যারাকপুরের দেবদূত ঘোষ, কলকাতা দক্ষিণের সায়রা শাহ হালিম, ডায়মন্ডহারবারের প্রতীক উর রহমানের মতো নেতা–নেত্রীরা। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সৃজন ভট্টাচার্য এবং শ্রীরামপুরের দীপ্সিতা ধরের সামান্য ব্যবধানে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আগামী ৮ জুন সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠক রয়েছে। তারপর পলিটব্যুরো বৈঠক আছে। আর ১৯–২০ তারিখে রাজ্য কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি উঠবে।