আজ, মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনা। দেশের কুর্সি কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দিনভর নজর থাকবে নাগরিকদের। ইতিমধ্যেই জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে পারদ চড়তে শুরু করেছে। সকলেই তটস্থ ফলাফল কোন দিকে যায় তা নিয়ে। কারণ এক্সিট পোল যা দেখিয়েছে তা বিরোধীরা মানতে নারাজ। ফলাফল অন্যরকম হবে বলেই তাঁরা আশাবাদী। এই আবহে দেশের আমলা মহলের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। দেশের প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ আজ। তাতে আমলাদের হাত থাকে অনেকটা। বিশেষ করে গণনা নিরপেক্ষ রাখতেই এই চিঠি।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আজকের গণনাকে সামনে রেখে সেই চিঠিতে বার্তা দিয়েছেন। এই চিঠিতে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীরা যেন কারও ভয়ে ভীত না হন এবং সংবিধান মেনে কোনও ভয় না পেয়ে দেশের কাজ করে যান। ৮১ বছরের এই নেতা আবেদন করেছেন দেশের আমলাদের কাছে যে, কোনও ‘অসাংবিধানিক’ কার্যকলাপের কাছে মাথানত করবেন না। আর কাউকে ভয় পাবেন না। নিজেদের কাজে মেধা ব্যবহার করতেও বলেছেন খাড়গে। আসলে তামাম বিরোধীরা একমঞ্চে এসে ইন্ডিয়া জোট তৈরি করেছে। তার উপর ভিত্তি করে দেশের মানুষের কাছে ভোট চেয়েছেন তাঁরা। নীরবে মানুষ ভোট দিয়েছেন। কিন্তু কাকে? সেটা বোঝা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ‘আমরা এক্সিট পোলে বিশ্বাস করি না’, মমতার সুরে গণনার প্রাক্কালে সরব হলেন সেলিম
ইতিমধ্যেই দেশের নানা প্রান্তে ভোটগণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে ফলাফল আসতে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিছু কিছু আসনের ফলাফল বেরিয়ে আসবে ঠিকই। তবে সামগ্রিক চিত্র পেতে সময় লাগবে। এই আবহে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই, একটি প্রাণবন্ত গণতন্ত্র এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী সংবিধান, যা আধুনিক ভারতের নির্মাতারা লিখেছেন।’ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে চিঠিতে উদ্ধৃত করে খাড়গে জানান, দেশের সরকারি কর্মচারীরা ‘স্টিল ফ্রেম অফ ইন্ডিয়া’। স্বাধীনতার পর কংগ্রেস অনেক সংস্থা গড়ে তুলেছিল। খাড়গের বক্তব্য, ‘প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিটি সরকারি কর্মচারী সংবিধানের শপথ নেন যে, তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে এবং বিশ্বস্তভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান ও আইন অনুসারে। ভয় বা পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সব মানুষের প্রতি সঠিক কাজ করবেন। অশুভ ইচ্ছা না রেখে।’
এখানেই থেমে থাকেননি কংগ্রেস সভাপতি। মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁর চিঠিতে আরও লেখেন, ‘গত দশকে শাসকদলের দ্বারা আমাদের স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে আক্রমণ, অবমূল্যায়ন এবং দমন করার একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছে। ফলে ভারতের গণতান্ত্রিক নৈতিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারতকে রেজিমেন্টাল একনায়কতন্ত্রে পরিণত করার ব্যাপক প্রবণতা রয়েছে। আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে দেখছি কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং নির্লজ্জভাবে ক্ষমতাসীন দলের নির্দেশ অনুসরণ করছে। কেউ কেউ সম্পূর্ণভাবে তাদের মতো করে কথা বলছে, তাদের কাজ করার পদ্ধতি এবং তাদের রাজনৈতিক বক্তব্যও গ্রহণ করেছে।’