লোকসভা নির্বাচন শেষ হয়ে ফলাফল প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে ঘাসফুল ঝড় অব্যাহত বাংলায়। বিজেপির জায়গা যে বাংলা নয় তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচন, পুরসভা নির্বাচন, পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন প্রমাণ করেছে বাংলার মানুষ দিদির গ্যারেন্টিতেই ভরসা রাখছেন। এখানে মোদীর গ্যারেন্টি বা ম্যাজিক কোনওটিই কাজ করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুগলবন্দীতে বাংলায় বাজিমাত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই আবহে ফাঁকা মঞ্চ দেখা গেল চাকরিপ্রার্থীদের। ধরনার ১১৭৫ তম দিনে বনধের চেহারা নিল চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ।
এই মঞ্চকেই বারবার ব্যবহার করেছে সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস। সরকার বিরোধী ধোঁয়া দিয়েছে এখানে এসে নেতারা। কিন্তু বাংলার মানুষ দিদির গ্যারেন্টিতেই ভরসা রেখেছেন। আর এটা টের পেয়েই মঙ্গলবারের দুপুরে ধরনা মঞ্চের ধারেকাছে কেউ এলেন না। নিয়োগের দাবিতে এসএসসি’র নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরা গান্ধী মূর্তির পাদদেশের ধরনা মঞ্চে রোজ দুপুরে এসে জড়ো হন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের দিন এলেন না কেউই। গান্ধী মূর্তির পাদদেশের পাশাপাশি মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশেও চাকরিপ্রার্থীদের তিনটি মঞ্চেই মঙ্গলবার কেউ এলেন না। তাই ফাঁকাই রইল।
আরও পড়ুন: এবার লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন, আশাতীত সাফল্যকেই কাজে লাগাতে চায় তৃণমূল
এখান থেকেই বারবার চাকরিপ্রার্থীরা ধরনা, অবস্থান, বিক্ষোভ, মিছিল করেছিলেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বারবার পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে গিয়েছিলেন। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে এসে গরমাগরম বক্তব্য প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিলেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে শিক্ষা দুর্নীতি বড় ইস্যু হবে বলে তাঁরা ভেবেছিলেন। তার জন্য সবরকম চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু মানুষের দেওয়া রায় দেখে এখন তাঁদের বক্তব্য, লক্ষ্মীর ভান্ডার থাক। একই সঙ্গে নিয়োগও দ্রুত হোক। এক চাকরিপ্রার্থীর বক্তব্য, ‘তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল জনাদেশ পেয়েছে। আশা করা যায় এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসংস্থানে গুরুত্ব দেবেন।’
শিল্প এবং কর্মসংস্থান এখন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের সামনে মূল অ্যাজেন্ডা। তা নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী সভা থেকেই তিনি বলেছিলেন, ১০ লাখ চাকরি তাঁর প্রস্তুত করা আছে। এই জনাদেশ দেখে চাকরিপ্রার্থী অভিষেক সেন বলেছেন, ‘বিপুল জনসমর্থনের অর্থ তো এটা নয় যে, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি হয়নি। রাজ্যের মানুষ হয়তো ভাতার উপরে আস্থা রাখল।’ চাকরিপ্রার্থী আর একজন বলেন, ‘আমাদের কথা কোনও রাজনৈতিক দলই ভাবে না। এই ভোট প্রমাণ করল, চাকরির দাবিতে আমাদের লড়াইটা আমাদের একার।’ তবে আজ, বুধবার থেকে আবার বসবেন তাঁরা মঞ্চে।