লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কিন্তু বাকি শরিকদের সমর্থনে এনডিএ সরকার গড়ে উঠবে। এটা সত্যিই প্রকৃত এনডিএ সরকার। কারণ বিজেপি এখন সংখ্যালঘু। এই আবহে বাংলার দিকে তাকালে বিজেপি জিতেছে ১২টি আসন। আগের বারের থেকে ৬টি আসন কমেছে। আর বামেরা এবার রাজ্যে একটাও আসন পায়নি । এই নিয়ে এবার বামফ্রন্টের অন্দরে কোন্দল চরমে পৌঁছেছে। তাই বামফ্রন্টের অন্দরে দুই শরিক দল এবার ফোঁস করে উঠেছে। শুধু ফোঁস করেই থেমে থাকেনি, বরং কড়া পদক্ষেপের কথা জানানো হয়েছে।
বামফ্রন্টের দুই শরিক দল—ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি বামফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানিয়েছে। অর্থাৎ এখন তারা আছে। কিন্তু ভবিষ্যতে কোনও নির্বাচনে বামফ্রন্টের সঙ্গে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট তারা করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। কারণ বাম–কংগ্রেসের জোট করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটি আসনও আসেনি। বামেরা একটি আসনও জিততে পারেনি। এমনকী শরিক দলগুলিরও জোটেনি কোনও আসন। বরং কংগ্রেস একটি আসন পেয়েছে মালদা দক্ষিণ। বাংলায় ৪২টি আসনের মধ্যে ২৯টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে বামফ্রন্ট ৩৩টি আসনে লড়াই করেছিল। সেখানে একটাও আসেনি বামেদের ঝুলিতে।
আরও পড়ুন: অখিলেশ–অভিষেক পৃথক বৈঠক নয়াদিল্লিতে, আপ নেতারাও দেখা করলেন বাড়িতে এসে
এদিকে ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে এবং ২০২৪ সালে বাম–কংগ্রেসের জোট করে কোনও লাভ হয়নি। এটা কাজ করেনি মানুষের কাছে। উলটে ফরওয়ার্ড ব্লক পুরুলিয়া, বারাসত, কোচবিহারে ভাল লড়েও হেরেছে। এবার পুরুলিয়া এবং কোচবিহারে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়ে দেয়। সেখানে আসন সমঝোতা হয়নি। এটা আরও বড় বিপর্যয়ের কারণ। এই বিষয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এই আসন সমঝোতা কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রন্টের সিপিএমের সিদ্ধান্ত। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। এখানে আমাদের নিজের প্রার্থী ছিল।’
অন্যদিকে কংগ্রেসের এখানে তেমন রাজনৈতিক প্রভাব নেই। সেখানে এমন জোট করা অবান্তর বলে মনে করছে ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি। নরেন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘আমরা কেন এই দায় নেব? আমরা যদি জোট করতাম তাহলে কখনও দায় এড়িয়ে যেতাম না। আমরা এটা আলোচনা করেছিলাম গোটা বামফ্রন্টের সঙ্গে, বিশেষ করে সিপিএমের সঙ্গে, আর বলেছিলাম এই জোটের পথ যেন খোলা না রাখা হয়।’ এই বিষয়টি নিয়ে আরএসপির সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘আমি এটিকে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের মধ্যে জোট বলে মনে করি না। এটি একটি সমঝোতা। আমি দলগুলির একত্রিত হওয়ার বিরোধিতা করি না। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের অন্য ধর্মনিরপেক্ষ বা সমমনস্ক দলের সঙ্গে জোট করতে চেয়েছিলাম।’ ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করার বিষয়টি বামফ্রন্টের বৈঠকে তোলা হবে বলেও তাঁরা জানান।