কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হয়নি। হতে চলেছে এনডিএ সরকার। যার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে বলে গিয়েছিলেন, বাংলা থেকেই এবার সবচেয়ে ভাল ফল হবে। সে ফল কতটা ভাল হয়েছে সেটা এখন দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার। তবে নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয়বারের মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী পেতে পারে বাংলা বলে সূত্রের খবর। যদিও এই প্রথম শরিক নিয়ে ঘর করতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। ইতিমধ্যেই শরিকদের দর কষাকষি শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও খবর। সকলের মন জুগিয়ে মন্ত্রিসভা গঠনই এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ নরেন্দ্র মোদীর কাছে। কিন্তু তারপরও মন্ত্রিসভায় একজন পূর্ণমন্ত্রী ও দু’জন প্রতিমন্ত্রী পেতে পারে বাংলা।
আসলে গতবার বেশি আসন বাংলা থেকে জিতেও চারটি প্রতিমন্ত্রী পেয়েছিল বাংলা। যা নিয়ে বাংলার মানুষের ক্ষোভ তৈরি হয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে দুই প্রতিমন্ত্রী হেরে বসে আছেন। একজন টিকিটই পাননি। আর একজন জিতেছেন। বাংলার মন জয় করতে তাই এমন পদক্ষেপ করা হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় কৃষ্ণনগরের বিজেপি সাংসদ সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় পূর্ণমন্ত্রী হয়েছিলেন। আবার মোদীর মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে এবং রাজ্যের মন্ত্রী। বাবুল সুপ্রিয়কে পরে প্রতিমন্ত্রী করে দেওয়াও হয়েছিল। বাকি সবই ছিল প্রতিমন্ত্রী। তবে এবার শান্তনু আবার জিতেছেন। তাই নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে পারেন। উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তমলুকের জয়ী সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: ‘এই জয় ভারতীয় ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করার সমান’, ইউসুফ পাঠানের আবেগপ্রবণ পোস্ট এক্স হ্যান্ডেলে
কিন্তু এখন দলের প্রতি গোঁসা হয়েছে সৌমিত্র খাঁয়ের। তিনি মুখও খুলেছেন। প্রশংসা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই তাঁর মুখ বন্ধ করাতে এবং দলে ধরে রাখতে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হতে পারে। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার আবার দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন। তাই তাঁকে প্রতিমন্ত্রী করা হবে কিনা সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির বুকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে বাংলার বিজেপি সাংসদরা যোগাযোগ রাখছেন। এতে স্নায়ুর লড়াই আরও বেড়েছে গেরুয়া শিবিরে। কারণ যদি তিন–চারজন সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তাহলে বাংলা থেকে পরবর্তী সময়ে মুছে যাবে বিজেপি। যদিও কতজন বিজেপি সাংসদ এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করেছেন সেই সংখ্যা অভিষেক বলেননি।
বিজেপি সূত্রে খবর, বাংলা থেকে পূর্ণমন্ত্রী করার ক্ষেত্রে দু’টি নাম চর্চায় আছে। সুকান্ত মজুমদার এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কারণ রাজ্য সভাপতি এবং বিরোধী দলনেতার পদে পরিবর্তন নিয়ে আসা হতে পারে। দিলীপ ঘোষকে বিরোধী দলনেতা করার প্রস্তাব ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লিকে জানিয়ে দিয়েছে আরএসএস। মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দিলীপকে প্রার্থী করতে চায় সংঘ। এই পরিস্থিতি নিয়ে দিলীপ বলেছেন, ‘দল যখন হারে, সংকট যখন আসে, তখন কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আর তাই তারা একটা শক্ত খুঁটি আঁকড়ে ধরতে চায়।’ শমীক ভট্টাচার্য এখন রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁকে পূর্ণমন্ত্রী করা হবে কিনা সেটা নিশ্চিত নয়। তবে নাম চাউর হচ্ছে। তবে মন্ত্রিত্ব নিয়ে শমীকের কথায়, ‘এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনাধীন বিষয়। কাকে কী দায়িত্ব দেওয়া হবে।’