কঠিন লড়াইয়ের পর এসেছে সাফল্য। তারপরই কালীঘাটের বাড়িতে ২৯ জন সাংসদ এবং কয়েকজন নেতাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি জানান, হুগলির রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কৃষ্ণনগরের মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিল। কারণ সেখানে বিজেপি রাজপরিবারের গৃহবধূকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছিল। এখন অবশ্য বিজেপির বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন পরাজিত অমৃতা রায়। যাঁর হয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রচার করেছিলেন। তবে এখন এই দু’জন নেত্রীকেই জয়ের জন্য প্রশংসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিষ্ণুপুরের পরাজিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে নথিপত্র তৈরি রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে। যিনি আগে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। আর মহুয়া মৈত্রকে আগে সংসদ থেকে অপবাদ দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল। সেটা প্রচারও করেন বিজেপি নেতারা। আর কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির গৃহবধূ অমৃতা রায়কে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে প্রার্থীও করা হয়। ইডির বাজেয়াপ্ত করা টাকা জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। সুতরাং একটা প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাই চিন্তায় ছিলেন দলনেত্রী। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার রাজনীতিতে নতুন। সেটাও একটা চিন্তার বিষয়। কিন্তু এতকিছুর পরও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মহুয়া। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেশ সাহস জুগিয়েছিল। এখন সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত বলেছেন তৃণমূলনেত্রী।
আরও পড়ুন: একাধিক জয়ী সাংসদের প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পৃথক নাম কাদের উঠল?
রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে হুগলি পুনরুদ্ধার করে বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর টিভি পর্দায় দেখা দিদি নম্বর ওয়ান এবার রাজনীতির মাটিতে দিদি নম্বর ওয়ান হয়ে দাঁড়ালেন। যদিও রাজনীতির ময়দানে নেমে লকেটের কাছ থেকে বহু কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল। জবাব দিলেন ফলাফলে। তবে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় সুনিশ্চিত করার জন্য সিঙ্গুরের বেচারাম মান্না, ধনেখালির অসীমা পাত্র এবং পান্ডুয়ার নেতাদের প্রশংসা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে মহুয়া মৈত্র যে জিতবে সেটা আগেই বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৩ সালে নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আর কয়েক মাস পর লোকসভা নির্বাচন। এখন ওরা মহুয়াকে তাড়াতে চাইছে। ওরা কি পাগল? মহুয়া তো আবার জিতে সংসদে যাবে।’
এবার আরও কয়েকটি আসন তৃণমূল কংগ্রেস জিতত বলে দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী। যেমন সামান্য ভোটে হেরে যাওয়া বিষ্ণুপুর লোকসভা আসন। ভোটের ব্যবধান মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার। এখানে সুজাতা মণ্ডলকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সূত্রের খবর, সুজাতাকে নথিপত্র তৈরি রাখতে বলেছেন নেত্রী। যাতে বিষ্ণুপুরের ফলাফল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মামলা করতে পারে। এবার বাঁকুড়া এবং কোচবিহার লোকসভা আসন দুটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কাঁথি ও তমলুক আসনও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে আসত। কিন্তু সেখানে নেতারা দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেননি বলে অভিযোগ।