দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে রাজু বিস্তাকে। তিনি আগেও সাংসদ ছিলেন। আর তাঁর পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপিরই বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তিনি নির্দল প্রার্থী হয়ে রাজুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নেমে পড়েছেন। আর এটাই স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছি। পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন তিনি। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। ওই ঘটনায় ‘অস্বস্তিতে’ পড়েছে বিজেপি। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে নিরুপায় হয় চুপ করে বসে আছেন নেতারা। এমনকী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভোট মেটার আগে দলের ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে গোপাল লামাকে। যিনি একদিকে ভূমিপুত্র অপর দিকে দুঁদে আমলা। বিজেপির এই খেয়োখিয়ি পরিস্থিতিতে লাভবান হবেন তিনিই। কারণ অন্যান্য আঞ্চলিক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করছে। আবার এখানে উন্নয়ন হয়েছে দেদার। রাজ্য সরকার এখানের মানুষের জন্য বিপুল পরিমাণ সামাজিক প্রকল্প দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে। এখানে এমন পরিস্থিতিতে যদি বিজেপি প্রার্থী হেরে যায় তাহলে ভোটের পর বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ‘বিদ্রোহ’ ভালভাবে নেয়নি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিষ্ণুপ্রসাদ যে সব দাবি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন সেগুলি সব দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অধিকাংশগ মানুষের কথা। তাই এখন যদি কোনও পদক্ষেপ করা হয় সেটা ব্যুমেরাং হবে। তাই এখন বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই পয়লা বৈশাখ, ঘুম ভাঙবে রবীন্দ্রসংগীতে, ১৪৪টি ওয়ার্ডে পালিত হবে বাংলা দিবস
ইতিমধ্যেই নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক। এখানে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের কথা উঠে এসেছে। কারণ গোর্খাল্যান্ডের আশ্বাস বারবার দিয়ে তিনবার দার্জিলিং আসন জিতে এসেছে বিজেপি। বারবারই ‘বহিরাগত’ প্রার্থীদের সাংসদ করেছেন পাহাড়বাসী। কখনও যশবন্ত সিনহা, কখনও সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়া, কখনও রাজু বিস্তা। এবার এঁদের বিরুদ্ধে সরব হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে ভোট চাইছেন বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। এই অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে চাইছে না বিজেপি। ‘সেফটি পিন’ প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়াই করছেন বিষ্ণুপ্রসাদ। আর তা দিয়েই রাজু বিস্তার ফানুস ফুটে করে দিতে চাইছেন বিষ্ণু।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোট হবে দ্বিতীয় দফায়। ২৬ এপ্রিল রায়গঞ্জ, বালুরঘাট এবং দার্জিলিংয়ে ভোট হবে। এখন দেখার বিষয় দুটি। এক, ফলাফল কেমন হয়। দুই, বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে বিজেপি কি পদক্ষেপ করে। বিষ্ণুপ্রসাদকে এই বিদ্রোহ থামিয়ে ঘরে ফেরাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামাকে। এখন তাঁকে দল সেখান থেকে সরে আসতে বলেছে বলে সূত্রের খবর। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে গোর্খা জনজাতির ভোট আছে। যা পাহাড়েও আছে। সেখানে এখন বিষ্ণুপ্রসাদের উপর ব্যবস্থা নিলে হিতে বিপরীত হবে। তাই বিজেপি নেতৃত্ব চুপচাপ। এই বিষয়ে কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামার বক্তব্য, ‘বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা যে দাবির কথা বলেছেন সেটা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়াকে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’