জোটে এখন ঘোঁট পেকে গিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছিল সিপিএম। আর তাতেই শরিকদের খোঁচায় বিদ্ধ সিপিএম। কারণ কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে গিয়ে নিজেদের আসন চলে যাচ্ছে। অথবা চতুর্মুখী লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এবার আবার কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হল। মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার দাবিদার ছিল কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে সিপিএম প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। মথুরাপুরে সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন ডা. শরৎচন্দ্র হালদার। সুতরাং এখন লাঠালাঠির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ কংগ্রেস প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছিল। শুধু নাম ঘোষণার অপেক্ষা ছিল।
সেখানে তড়িঘড়ি সময় না দিয়ে এবং কংগ্রেসের জন্য অপেক্ষা না করেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে সিপিএম। এবার মথুরাপুরে প্রার্থী দেবে বলে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে কথা নাকি জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাহলে তারপরও কেন প্রার্থী দিল সিপিএম? এই প্রস্ন উঠতে শুরু করেছে। আসলে সিপিএম মনে করে কংগ্রেস এখানে প্রার্থী দিলে তেমন সুবিধা করতে পারবে না। আবার জয়নগর আসন শরিক আরএসপি প্রার্থী দেবে। সেটা কংগ্রেসকে তাই দেওয়া যাবে না। আলিপুরদুয়ার ও বালুরঘাটে আরএসপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। কিল হজম করে ভাগের তিনটি আসনের দাবি ছেড়ে দুটি আসনে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিপিআইকে। এখন আরএসপিকে যদি বালুরঘাট ও আলিপুরদুয়ার নিয়ে চুপ করে থাকতে বলা হয় তাহলে আবার শরিকি গণ্ডগোল লাগতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অর্ধেক দামে সোনা দেওয়ার টোপে পা, বকখালিতে গিয়ে সর্বশান্ত ক্রেতা, গ্রেফতার ২
এই আবহে মথুরাপুর সিপিএম নিয়ে নেওয়ায় জোট এখন ঘোঁটে পরিণত হয়েছে। আর জয়নগর আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে বলে সূত্রের খবর। এটা হলে সে পথে বাধা হবে আরএসপি। কোচবিহারে বামফ্রন্টের প্রার্থী আছে। তারপরও সেখানে লড়ছে কংগ্রেস। মথুরাপুরে এখন যদি কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করে তাহলে চতুর্মুখী লড়াই হবে। তাতে আখেরে কারও লাভ হবে না। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসকে সিপিএম সমর্থন করবে বলেছে। তাই পৃথক লড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। সুতরাং শরিকদের মধ্যে সমস্যা অব্যাহত।
এই ঘটনার পর ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় ফোন করে বিমান বসুকে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এমনকী আগামীকাল সোমবার পুরুলিয়া আসনে পৃথকভাবে নিজেদের দলের প্রার্থী ধীরেন মাহাতোর নাম ঘোষণা করবে ফরওয়ার্ড ব্লক বলে জানিয়ে দিয়েছে। সুতরাং ঘরে–বাইরে ব্যাপক চাপে আছে সিপিএম। একদিকে জোটে জট তৈরি হচ্ছে। অপরদিকে শরিকি কাঁটা আঘাত করছে। এভাবেই বামফ্রন্টে ফাটল সামনে এসেছে। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত এই ঠাণ্ডা লড়াই কোথায় গিয়ে থামে।