পাহাড়ে বিজেপি চিঁড়েচ্যাপ্টা হতে চলেছে। কারণ বিমল গুরুংয়ের উপর ভরসা রাখার পরও নির্বাচনী পথ মসৃণ হল না। এখানে আবার দু’জন পথের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ওই দু’জনেই নির্দল প্রার্থী। তাঁদের একজন কার্শিয়াংয়ের বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা এবং অপরজন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেত্রী বন্দনা রাই। বিষ্ণুপ্রসাদ নির্বাচন কমিশনের থেকে প্রতীক পেয়েছেন ‘সেফটিপিন’। আর বন্দনা রাই পেয়েছেন ‘ডোর বেল’। এখানেই শেষ নয়, সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর দেখা গিয়েছে ওই দুই প্রার্থী–সহ এবার দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে লড়ছেন ১৪ জন।
নির্দল প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার সঙ্গে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তার আদায়–কাঁচকলায় সম্পর্ক। তাই রাজু বিস্তাকে সেফটিপিন দিয়ে খোঁচা দিয়েছেন বিষ্ণুপ্রসাদ। অথচ দু’জনেই একই দলের সদস্য। প্রতীক পেয়ে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার তোপ, ‘এবার সেফটিপিন দিয়ে বিজেপির ফানুস চুপসে দেবো। রাজু বিস্তার দুর্নীতিই হবে আমার প্রচারের মূল বিষয়।’ নির্দল প্রার্থী বন্দনা রাই বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘গোর্খাল্যান্ডের নাম করে ভোট নিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা আর হবে না। সেটা ডোর বেল বাজিয়ে সবাইকে বলে দিয়ে আসব।’ বিষ্ণুপ্রসাদ মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে সিংমারীতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সদর দফতরে গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন বলে সূত্রের খবর। বন্দনা গুরুংয়ের দলের বিদ্রোহী নেত্রী।
আরও পড়ুন: ‘এখন নির্বাচন কমিশনে প্যারেড করছে’, তৃণমূল সাংসদের বেলাগাম আক্রমণ দিলীপ ঘোষের
এই পরিস্থিতিতে গুরং চুপচাপ রয়েছেন। বলা যেতে পারে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেন বিমল গুরুং। তাতে চাপে পড়ছে আখেরে বিজেপি। গুরুং দেখতে চাইছেন দার্জিলিংয়ে কে জেতে সেটা দেখে পরবর্তী রণকৌশল সাজাবেন। বিজেপি নেতৃত্ব চাপে পড়লেও মুখে কিছু বলতে নারাজ নির্দলদের সম্পর্কে। আর চাপ বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে হেভিওয়াট প্রার্থী দিয়েছে। তিনি হলেন গোপাল লামা। নির্দল এই দুই প্রার্থী বিজেপির ভোট কাটলে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের রাস্তা প্রশস্ত হবে। গোটা পরিস্থিতি বুঝতে পেরেও দার্জিলিংয়ে বিজেপির সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেছেন, ‘নির্দলরা লোকসভা নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে না। ভোট হবে প্রতীকে।’
প্রতীকে ভোট হবে যদি তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া হয় তাহলে পাহাড়ে এখন তৃণমূল কংগ্রেসকে সাহায্য করছে কয়েকটি আঞ্চলিক দল। তাছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্য সরকারে আছে। মুখ্যমন্ত্রী বারবার পাহাড়ে ছুটে এসে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পর পর সামাজিক প্রকল্প মানুষের দুয়ারে নিয়ে এসেছেন। তারপর গোপাল লামার মতো ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেছেন। যিনি একদা আমলা ছিলেন। পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। আর বন্দনা রাই জনপ্রিয় নেত্রী। পাহাড়ে তিনি ভালই ভোট টানবেন। আবার বিষ্ণুপ্রসাদ বিজেপির ভোট কাটবেন। তাই বিজেপি সবদিক দিয়ে ভোট হারানোর সম্ভাবনা বাড়ছে।