কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে প্রায়ই গোলমাল লেগে থাকে। কখনও গুলি চলে, তো কখনও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর গাড়িতে হামলা হয়। আবার কখনও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সভায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়। এমনই গোলমাল তৈরি করে বিএসএফকে দিয়ে ভোট করিয়ে নিতে পারেন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। নির্বাচনী প্রচারে এসে কোচবিহারে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করে উদয়ন গুহকে ‘বি কুল’ থাকার পরামর্শ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সতর্ক করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যাতে প্ররোচনায় পা না দেন।
এদিকে কয়েকদিন আগে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তুমুল অশান্তি দেখা দিয়েছিল সেদিন প্রকাশ্য রাস্তায়। এবার সেই উদয়নকেই বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বললেন, ‘ঠান্ডা মাথায় করতে হবে। উদয়নকে বলব, ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। ঠান্ডা মাথায় ভোটটা করতে হবে। ও তোমাকে গণ্ডগোলে জড়িয়ে দিয়ে বিএসএফকে দিয়ে ভোটটা করিয়ে নেবে। ভুলেও এটা করতে দিও না। আগে থেকে নিজেকে তৈরি রাখো।’
আরও পড়ুন: ‘মুখোমুখি এসে বসো দেখি’, মোদী–শাহদের বিতর্কসভায় আহ্বান করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
অন্যদিকে আজ, শুক্রবার দিনহাটায় সভা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বসুনিয়ার সমর্থনে প্রচারসভা থেকে জনতার উদ্দেশে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের বক্তব্য, ‘শান্তি বজায় রাখুন। মাখা ঠাণ্ডা রাখুন। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কুল কুল।’ তারপরই উদয়ন গুহর দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বি কুল। ও তোমাকে গণ্ডগোলে ফেলে ভোট বিএসএফকে দিয়ে করিয়ে নেবে। ভুলেও সেটা করো না। ভুল করতে দিও না।’ এখানে মুখ্যমন্ত্রী নাম করেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর। কিন্তু ইঙ্গিতটা ছিল তাঁর দিকেই। সেটাই এভাবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহকে বুঝিয়ে দেন তিনি।
এছাড়া রাজ্য প্রশাসনকেও লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সতর্ক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘প্রশাসনকে বলব, এখানে ১৯ এপ্রিল ভোট। ১৭ তারিখ বিকেল ৫টার পর এখানে যেন একটাও মিছিল–মিটিং না হয়। বাইক বাহিনীকে যদি অ্যালাও করেন, বিএসএফের সঙ্গে যোগসাজশ করেন, তাহলে মনে রাখবেন আমজনতা আপনাকেও একদিন বিতাড়িত করবে। আপনাদের ছেড়ে কথা বলবে না। মাথা ঠান্ডা রাখুন। শান্তি বজায় রাখুন। আমি দুঃখিত, প্রশাসন সব দেখেও চুপচাপ বসে থাকে। কিসের ভয়? চাকরি যাবে? ইলেকশন কমিশন সরিয়ে দেবে? তাহলে দু’মাস বাদে কী করবেন? তার থেকে এখনই দিল্লি চলে যান না। কে বারণ করেছে। হয় দিল্লি যান, না হলে নিশীথের বাড়ি চলে যান। তা হলে আর আপনাদের আইনশৃঙ্খলা সামলাতে হবে না। কোচবিহারে যদি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়, আমি কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না।’