'মা, মাটি, মানুষের' স্লোগান নয়, পশ্চিমবঙ্গে এখন ‘মোল্লা, মাদ্রাসা এবং মাফিয়ার স্লোগান’ ওঠে। এমনই অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীরশংকর বসুর সমর্থনে জনসভা থেকে শাহ দাবি করেন যে দুর্গাপুজোর সময় প্রতিমা নিরঞ্জন করতে দেওয়া হয় না। অথচ রমজান মাসের সময় মুসলিম কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন শাহ। তিনি দাবি করেন যে মুসলিম কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কেন ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করা হবে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শাহ।
শাহের ‘হিন্দু-মুসলিম’ তত্ত্ব
তাঁর কথায়, ‘মা, মাটি, মানুষের স্লোগান দিয়ে এই মমতা দিদি ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু মা, মাটি, মানুষের স্লোগান তো গুম হয়ে গিয়েছে। মোল্লা, মাদ্রাসা এবং মাফিয়ার স্লোগান দেওয়া হচ্ছে বাংলার মাটিতে। ইমামদের, মোল্লাদের কি বাংলার কোষাগার থেকে টাকা দেওয়া উচিত? হাইকোর্ট না বলে দিয়েছে, মমতা দিদি ওয়াকফ বোর্ড থেকে দিচ্ছেন।’
সেইসঙ্গে শাহ বলেন, ‘রামমন্দিরের বিরোধ করেন (মমতা)। দুর্গা বিসর্জনের (দুর্গাপুজোয় প্রতিমা নিরঞ্জন) অনুমতি দেন না। রমজানে মুসলিম কর্মচারীদের ছুটি দেন। মমতাদিদি সেটায় আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। আপনি ছুটি দিন। কিন্তু আমাদের দুর্গাপুজোয় কেন দেন না, সেটার জবাব তো আপনার থেকে চাই আমরা। এরকম ভেদাভেদ কেন?’
আরও পড়ুন: ‘অনুপ্রবেশকারীরাই TMC-র ভোটব্যাঙ্ক,’ CAA থেকে দুর্নীতি, বনগাঁয় শাহের নিশানায় মমতা
মোদীর ‘হিন্দু-মুসলিম’ মন্তব্যের পরেই মুখ খোলেন শাহ
শাহ এমন একটা দিন প্রচারে এসে সেই মন্তব্য করেছেন, যার আগেই একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন যে তিনি কোনওদিন হিন্দু-মুসলিম করবেন না। সংবাদমাধ্যম সিএনএন-নিউজ১৮-র সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, '(রাজনীতিতে) যেদিন থেকে আমি হিন্দু-মুসলিম নিয়ে কথা বলতে শুরু করব, সেদিন থেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে যোগ্যতা হারিয়ে ফেলব আমি। কখনও হিন্দু-মুসলিম করব না আমি। এটাই আমার প্রতিজ্ঞা।'
আরও পড়ুন: আগে আমাদের কাশ্মীরে ‘আজাদি’ স্লোগান উঠত, এখন PoK-তে সেই স্লোগান উঠছে: অমিত শাহ
সেইসঙ্গে ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি হতবাক হয়ে যাই। কে আপনাদের বলেছেন যে কেউ যখন বেশি সন্তান থাকা লোকেদের কথা বলেন, তখন ইঙ্গিতটা মুসলিমদের দিকে থাকে? কেন মুসলিমদের প্রতি এত অবিচার কেন? গরিব পরিবারেও এরকম অবস্থা। যখন দারিদ্র্য থাকে, তখন সামাজিক বিষয় ছাপিয়ে সন্তানের সংখ্যা বেশি হয়। আমি হিন্দু বা মুসলিমের কথা উল্লেখ করিনি। আমি বলেছি যে আপনি যত সন্তানের দেখভাল করতে পারেন, তত সন্তান থাকা উচিত। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে দেবেন না যে আপনার সন্তানের দেখভাল করতে হবে সরকারকে।'
আরও পড়ুন: Fact Check: কর্ণাটকে মোদীর বিরুদ্ধে ভোট দিলে মুসলিমদের আর্থিক সহায়তা? চিঠির দাবি কি সত্যি