'মর্দ কো দরদ হোতা হ্যায়' অর্থাৎ পুরুষরা ব্যথা অনুভব করে, এই ব্যানারের অধীনেই, পুরুষের অধিকার নিয়ে সোচ্চার উত্তরপ্রদেশের একটি রাজনৈতিক দল। নারীর অধিকার নিয়ে সরব গোটা দেশ। এরই মধ্যে লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন, যৌতুক, গার্হস্থ্য সহিংসতার শিকার হওয়া পুরুষদের নিয়ে কথা বলছে মেরা অধিকার রাষ্ট্রীয় দল (MARD)। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, মেরা অধিকার রাষ্ট্রীয় দল, যৌতুক নিষেধাজ্ঞা আইন ও গার্হস্থ্য সহিংসতা আইন থেকে শুরু করে নারীর সুরক্ষার মতো আইনের চাপে পড়ে আইনি বিবাদে জড়িয়ে পড়া পুরুষদের অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত হয়েছিল।
দল গঠনের পর থেকে, মর্দ সাতটি নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আসছে, যার মধ্যে রয়েছে বারাণসী এবং লখনউতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন, ২০২০ সালে বাঙ্গারমাউতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপনির্বাচন এবং বেরেলি, লখনউ উত্তর, বকশি কা তালাব (লখনউ) এবং চৌরি চৌরার বিধানসভা নির্বাচন। নিয়মিত অধ্যবসায় সত্ত্বেও, দলটি ধারাবাহিকভাবে হতাশাজনক ফলাফলের মুখোমুখি হয়েছে, নির্বাচনে জমানত রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তবুও, অতীতের বিপর্যয় থেকে বিচলিত না হয়ে, মর্দ চলতি বছরের সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে, লখনউ, গোরখপুর এবং রাঁচির মতো বিশিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় লোকসভা আসনের জন্য প্রার্থী দিয়েছে। এই দলের প্রধান ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন কপিল মোহন চৌধুরী, সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান দলের সভাপতি, যিনি লখনউ লোকসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চৌধুরী নিজে ১৯৯৯ সাল থেকে যৌতুকের মামলায় জড়িয়ে আছেন, ২৫ বছর পরেও অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে সেটি।
- ঠিক কী ঘটেছিল কপিলের সঙ্গে
৫২ বছর বয়সী কপিল বলেছেন, আমার আগের বিয়েতে দুই বাচ্চা রয়েছে, দুজনেই আমার প্রাক্তন স্ত্রীয়ের কাছে রয়েছে। পরবর্তীকালে, আমি যৌতুক এবং পারিবারিক সহিংসতার মিথ্যা অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিলাম। লখনউতে এই আইনি লড়াই লড়ার সময়, আমি একই ধরনের দুর্দশার মধ্যে অসংখ্য ব্যক্তির মুখোমুখি হয়েছি। যদিও আমি বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু যৌতুকের মামলাটি অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে। এই সংগ্রামই আমাদেরকে পুরুষদের অধিকারের পক্ষে একটি রাজনৈতিক সত্তা প্রতিষ্ঠা করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। কপিল যোগ করেছেন, তিনি ২০১১ সালে পুনরায় বিয়ে করেছিলেন।
- ঠিক কী কী প্রতিশ্রুতি দেয় এই পার্টি
মর্দ পার্টির 'ইসতেহার' সাহসী অঙ্গীকারের পরিচয় দেয়, যার মধ্যে একটি হল 'পুরুষ কল্যাণ মন্ত্রণালয়' এবং 'পুরুষদের জন্য জাতীয় কমিশন' প্রতিষ্ঠা। তাঁদের আইনি এজেন্ডায় প্রস্তাবিত 'মেন'স সেফটি বিল' রয়েছে, যার লক্ষ্য নারীদের সুবিধার্থে অনুভূত আইন থেকে উদ্ভূত অবিচার রোধ করা, পাশাপাশি পারিবারিক বিষয়ে সহায়তা প্রদানের জন্য একটি 'মেনস পাওয়ার লাইন' তৈরি করা।
উপরন্তু, পুরুষদের পারিবারিক বিরোধগুলি পরিচালনা করার জন্য একটি 'পরিবার কল্যাণ কমিটি'ও প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীয়ের বিবাহবিচ্ছেদের পরে শিশুর হেফাজত আইনের পক্ষে এবং লিভ-ইন সম্পর্ক বন্ধ করার পক্ষে কথা বলে এই রাজনৈতিক দল। মহিলাদের অন্তর্ভুক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, কপিল বলেছিলেন, 'অবশ্যই, আমাদের লক্ষ্য পুরুষদের অধিকার রক্ষা করা, মহিলাদের উপর বাধা সৃষ্টি করা নয়।'