সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, এই সাধু সঙ্ঘগুলি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে। এই আবহে এবার বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে মোদী পালটা আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতা তুলে ধরে মমতাকে তুলোধোনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী দাবি করেন, তাঁর জীবন গড়ে তোলার নেপথ্যে মিশনের অবদান রয়েছে। তাঁর কথায়, 'গোটা দেশ জানে আমার জীবন গড়তে রামকৃষ্ণ মিশনের কত বড় অবদান রয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে কত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আমার। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও রাতে থাকতে হলে রামকৃষ্ণ মিশন সন্ন্যাসীদের সঙ্গে থাকি।' (আরও পড়ুন: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় এল বড় বদল, দিশা দেখাবে কলকাতার বাকি রুটগুলিকেও)
আরও পড়ুন: কর্মী সংখ্যা কমলেও ক্রমে 'স্মার্ট' হচ্ছে কলকাতা মেট্রো, সামনে এল নয়া তথ্য
মোদী আরও বলেন, 'বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয় এনে দিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। আর এখানকার মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চ থেকে এই মহান সংস্থাগুলিকে ধমকাচ্ছেন। আর তাঁর ধমকে তৃণমূলের গুন্ডাদের সাহস বাড়ছে। জানতে পারলাম, জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রমে গত রাতে ভাঙচুর হয়েছে। আশ্রমের কর্মচারীদের হেনস্থা করা হয়েছে। তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাংলাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল সরকার? কখনও বাংলায় রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি দেওয়া হবে, আশ্রমে ভাঙচুর হবে... কোনও দেশবাসী কখনও ভেবেছিলেন এটা? কিন্তু নিজের ভোটব্যাঙ্ককে তুষ্ট করতে সব সীমা পার করে গিয়েছে তৃণমূল।'
আরও পড়ুন: মমতাকে নিয়ে 'কুরুচিকর' মন্তব্য নিয়ে কমিশনের শোকজের জবাব অভিজিতের
এর আগে নির্বাচনের সময় তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলার অভিযোগ করে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজকে বিঁধেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশনকেও 'কাঠগড়ায়' তুলেছিলেন। পরে অবশ্য সুর নরম করেছিলেন মমতা। তবে ১৮ মে তাঁর যে ভাষণ ঘিরে এই বক্তব্য, তাতে তিনি বলেছিলেন, 'সব সাধু এক হন না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে... কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরেই আছেন। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না... সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছে।'
এরপর মমতা আরও বলেছিলেন, 'কে কে এই সব করছে, আমি তাদের চিহ্নিত করছি। আমি রামকৃষ্ণ মিশকে কোন সাহায্যটা করিনি। সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি সমর্থন করেছিলাম আপনাদের। সিপিএম কিন্তু তখন আপনাদের কাজ করতে দেয়নি। আর আসানসোলে একটি রামকৃষ্ণ মিশন আছে... দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলা হয়। কেন সাধুরা এই কাজ করবেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে। ওদের যারা মেম্বার হয়, দীক্ষা নেয়, তারা আছে। তাদের আমি ভালবাসতে পারি। আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কোনও দিনও। এটা আমি জানি। তা হলে আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব? মনে রাখবেন, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকত না, আপনাদের এই মেয়েটা যদি না থাকত।'