প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ধ্যান করবেন, তখন যেন কোনও ক্যামেরা না থাকে। নির্বাচন কমিশনের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছে কংগ্রেস। শতাব্দীপ্রাচীন দলের দাবি, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কন্যাকুমারীতে মোদী যে ৪৮ ঘণ্টা ধ্যান করবেন, সেটার মাধ্যমে ‘সায়লেন্স পিরিয়ড’ (ভোটগ্রহণের আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে প্রচার বন্ধ রাখতে হবে) লঙ্ঘন করার চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী। যিনি বারাণসী লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করছেন। যে কেন্দ্রে আগামী শনিবার ভোট আছে। সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ধ্যান করার বিষয়টি সম্প্রচার না করা হয়, সেই দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। যদিও কংগ্রেসের সেই দাবি কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে ধন্দ আছে। সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এমন কোনও নির্বাচনী বিধি নেই, যা নির্বাচনের মধ্যে মোদীকে ধ্যান করা থেকে আটকাতে পারে।
কংগ্রেস কী অভিযোগ করেছে?
বুধবার কমিশনের সঙ্গে দেখা করে মোদীর ধ্যান নিয়ে একটি স্মারকপত্র তুলে নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা, অভিষেক সিঙ্ঘভি এবং সইদ নাসের হুসেন। তাঁরা দাবি করেছেন, মোদী যে কন্যাকুমারীতে ধ্যান করবেন বলে দাবি করেছেন, সেটা তিনি করলে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হবে। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ধারাও ভঙ্গ করা হবে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস।
স্মারকপত্রে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, মোদী যে ধ্যান করেন, সেটা টিভিতে সম্প্রচারিত হবে। অর্থাৎ বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনের জন্য যে ‘সায়লেন্স পিরিয়ড’ থাকবে, সেটার মধ্যেই সম্প্রচারিত হবে মোদীর ধ্যান। তিনি কন্যাকুমারীতে বসে ধ্যান করে আদর্শ আচরণবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখাতে চাইছেন। আর ভোটারদের মন জিততে চাইছেন মোদী।
গত কয়েকদিনে বিজেপি আরও ২৭টি আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, ‘২৪-৪৮ ঘণ্টা পরে তিনি ধ্যান শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ ১ জুন সন্ধ্যা থেকে ধ্যান শুরু করতে পারেন। আর উনি যদি ৩০ মে থেকে ধ্যান করতে চান, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে যে টিভিতে যেন সম্প্রচার করা না হয় বা সংবাদমাধ্যমে যেন সেই খবর প্রকাশ না করা হয়।’
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম কী বলছে?
সূত্র উদ্ধৃত করে পিটিআইয়ের প্রতিবেদন দাবি করা হয়েছে, ‘সায়লেন্স পিরিয়ড’-র সময় প্রচারের বিষয়টি ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ ধারায় উল্লেখ করা আছে। কিন্তু একাধিক দফায় যখন ভোটগ্রহণ হয়, তখন সেই নির্বাচনের নিয়ম কার্যকর হয় না। গত মাসে কমিশনের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল, সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যে এলাকায় নির্বাচন হচ্ছে, সেটা নিয়ে যদি কোনও কথা বলা না হয়, তাহলে কোনও বাধা নেই। যদি কোনও শব্দ উচ্চারণ না করা হয়, তাহলে ভোটের বিধি ভঙ্গ হয় না হবে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।