বিধানসভার মতো লোকসভাতেও রাজ্যে দেখা গিয়েছে সবুজ ঝড়। একাধিক আসনে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছে তৃণমূল। তবে ভোট পর্ব মিটতেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে। যার মধ্যে সিংহভাগই আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যজুড়ে ভোট পরবর্তী হিংসা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। সেই সময় দলের আক্রান্ত কর্মী সমর্থকদের বিনামূল্যে আইনি সাহায্য দিতে মাঠে নেমেছিল আরএসএস। লোকসভার পরে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটতেই ফের মাঠে নামল আরএসএস।
আরও পড়ুন: ফলের পরেই বাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি, মারধর, বাংলার বহু জায়গায় ভোট পরবর্তী হিংসা
ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তরফে আক্রান্তদের সাহায্য করার জন্য একটি রাজ্যস্তরীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। আক্রান্ত কর্মীদের একটি মেল আইডিও পাঠানো হয়েছে। সেটি হল - postpollviolence@gmail.com। সেই মেল আইডিতে আগামীকালের মধ্যে আক্রান্ত কর্মীদের ছবি, নথি, ভিডিয়ো পাঠাতে বলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী দিনে এই সমস্ত তথ্য আদালতে পেশ করা হবে।
ভোটের ফল বেরনোর পরেই বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। শান্তিপুর, ক্যানিং, নিউ টাউন, মধ্যমগ্রাম, দুর্গাপুর, হাওড়া সহ বহু জায়গায় আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। শান্তিপুরে তৃণমূলের যুব নেতার বাড়ির লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ভাটপাড়ায় গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় বিজেপির এক এজেন্টের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরেও ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এক সিপিএম নেতার মেয়ের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হাওড়ার ডোমজুড় থানা এলাকাতেও বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর, বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। মধ্যমগ্রামেও বিজেপি পার্টি অফিস এবং একাধিক বাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। আবার ক্যানিংয়ে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। সব ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে তৃণমূলের ব্যাপক জয়ের পরেই মদন মিত্র দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়েছিলেন উল্লাস যেন কোনওভাবে মাত্রা ছাড়া না হয়। তারপরও দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলের নেতা কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২০২১ সালের ভোট পরবর্তী হিংসায় অনেক কর্মী বাড়ি ছাড়া হয়ে ছিলেন। তবে ভোটের কথা ভেবে তারা দলের স্বার্থে কাজ করেছিলেন। আবার তারা পুরোদমে দলের স্বার্থে কাজ করেছেন। কিন্তু, লোকসভার পর আবার তারা ঘরছাড়া হয়েছেন।