রাজ্যের সনাতনী সন্ন্যাসীদের প্রধান ২ সংঘ রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ শোনা গেল রবিবার দিনভর। বেলডাঙা থেকে দুর্গাপুর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মমতার বক্তব্যে ধিক্কার জানালেন মহারাজদের ভক্তরা। যদিও মমতার বক্তব্যকে গুরুত্বই দিতে রাজি নন সন্ন্যাসীদের অনেকে। ভারত সেবাশ্রম সংঘের দুর্গাপুর আশ্রমের সম্পাদক স্বামী আত্মস্থানন্দ।
আরও পড়ুন: ক্রমশ কাছে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, পণ্ড হতে পারে রাজ্যের ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ
পড়তে থাকুন: ভোটের মধ্যে তৎপর কেন্দ্রীয় এজেন্সি, BJP কর্মী খুনের তদন্তে পূর্ব মেদিনীপুরে NIA
শনিবার হুগলির গোঘাটের জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেলডাঙা আশ্রমের প্রধান কার্তিক মহারাজকে আক্রমণ করে বলেন 'সব সাধু তো সমান নয়, আমরাও সবাই সমান নই। বহরমপুরে একজন কার্তিক মহারাজ আছেন। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যিনি তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেবেন না বলেন, তাঁকে সাধু বলে মনে করি না। এর অর্থ উনি সরাসরি পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি চিহ্নিত করেছি কে কে করেছেন।'
তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীরা অভিযোগ তুলছেন সাধু-সন্তদেরও অপমান করা হয়েছে। দুর্গাপুরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের সম্পাদক স্বামী আত্মন্থানন্দ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে তাচ্ছিল্ল করে বলেন,’ও একটা পাগলি, তার কথার কোন ঠিক নেই। প্রধানমন্ত্রীকে উল্টোপাল্টা কথা, মুখ্যমন্ত্রীর যেটা বলা উচিত সেটা বলে না, এটা মাথা খারাপ ছাড়া আর কী হবে?
কার্তিক মহারাজকে মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির প্রতিবাদে রবিবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় ভারত সেবাশ্রম সংঘের ভক্তরা একটি ধিক্কার মিছিলের আয়োজন করেন। মিছিলটি শুরু হয় বেলডাঙ্গা ভারত সেবাশ্রম সংঘ থেকে ছাপাখানা হয়ে নেতাজি পার্ক হয়ে হরিমতি হয়ে আবার ভারত সেবাশ্রম সংঘ শেষ হয়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী এক ভক্ত বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কি প্রমাণ করতে পারবেন যে কার্তিক মহারাজ কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন? ওনার কাছে ভিডিয়ো থাকলে প্রকাশ করুন। নইলে মহারাজের কাছে ক্ষমা চান। উনি বুঝেছেন এবার মুসলিম ভোট আর শুধু ওনার দল পাবে না। তাই মুসলিম ভোটকে তৃণমূলের ঝুলিতে ভরতে মহারাজকে আক্রমণ করেছেন তিনি।’ ভক্তদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী নিজের দলের বিধায়ক হুমায়ুঁ কবিরের মন্তব্য নিয়ে চুপ ছিলেন কেন? হিন্দুদের ভাগীরথিতে ভাসিয়ে দেব বলে হুমায়ুঁ যে মন্তব্য করেছিলেন তার প্রতিবাদ কেন করেননি তিনি। সম্প্রতি তৃণমূলকে ভোট দিতে যে লিখিত আবেদন ইমাম অ্যাসোসিয়েশন প্রকাশ করেছে তার বিরোধিতা কেন করেননি তিনি?
আরও পড়ুন: ‘পিসি-ভাইপোকে ছাড়ব না…হারিয়ে দেখাব,’ জেল থেকে বেরিয়েই বিস্ফোরক সন্দেশখালির মাম্পি
তবে সন্ন্যাসীরা বলছেন, সন্ন্যাসীরা যেমন রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পারেন না তেমনই কে সন্ন্যাসী আর কে নয় তা ঠিক করার অধিকার মুখ্যমন্ত্রীর নেই। শনিবার উনি নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে মন্তব্য করেছেন। কে সন্ন্যাসী আর কে সন্ন্যাসী নন তা নির্ধারণ করতে পারে একমাত্র সন্ন্যাসীদের সংঘ।