লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ–পর্ব শুরু হয়েছে। আর তখনই শুক্রবার সকালে বিস্ফোরক অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে সরাসরি কথা বলতে শোনা যাচ্ছে, জনৈক এক শিক্ষককে এবং তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের জেরে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন এই শিক্ষক। যিনি টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অডিয়ো ক্লিপে স্বীকার করেছেন। যদিও এই অডিয়ো ক্লিপ যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। এই অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত।
এই শিক্ষক পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া মহকুমার কুকড়াহাটি এলাকায় থাকেন। যিনি শুভেন্দু অধিকারীর (বিরোধী দলনেতা) কথায় ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। আর এই টাকা ওই জনৈক শিক্ষক দিয়েছিলেন প্রলয় পালকে। যিনি এখন বিজেপিতে। এবার চাকরি চলে যাওয়ায় ওই শিক্ষক ফোন করেন দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। সেই ফোনালাপে শোনা যাচ্ছে, ওই শিক্ষক ১২ লক্ষ টাকা শুভেন্দু অধিকারীর কথায় প্রলয়কে দিয়েছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেতে ১২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে অডিয়ো ক্লিপে। সুতরাং শুভেন্দু অধিকারী যে এখন বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করা উচিত। উনি দায়ী। সেখানে এই অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস করল দুর্নীতি করেছিলেন শুভেন্দুও।
ওই শিক্ষকের নাম সুমিত পাত্র বলে জানা গিয়েছে অডিয়ো ক্লিপ থেকে। দিব্যেন্দু অধিকারীকে তেমনই টেলিফোনে বললেন। গোটা ঘটনা সবটাই টেলিফোনের কথাবার্তায় প্রকাশ্যে এসেছে। সেক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার শুরুতেই বিপাকে পড়ে গেল বিজেপি বলে মনে করা হচ্ছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস বড় হাতিয়ার পেয়ে গেল। প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই রায়ের পর বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। এবার এই অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তিনি কি বলেন সেটাই দেখার। পরিস্থিতি এখন পাল্টে যাওয়ায় এসএসসি’র কাছে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা চাইল সিবিআই। আগেই অযোগ্যদের তালিকা কলকাতা হাইকোর্টের কাছে পেশ করা হয়েছিল বলে জানান এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। তাহলে সিবিআই করল কী? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: একই আসনে জোড়া প্রার্থী বিজেপির, দেবাশিসের পর এলেন দেবতনু, জমা পড়ল মনোনয়ন
এছাড়া গতকাল তমলুকে সভা করতে এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি সুর চড়িয়ে বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ দুর্নীতি করেনি। এই দুর্নীতি তো গদ্দারের কাছ থেকে শিখেছিল তৃণমূল। এখন বিজেপিতে গিয়ে সাধু হয়েছে। আর আজ যে অডিয়ো ক্লিপ ফাঁস হল তাতে মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই সিলমোহর পড়ল। যদিও চাকরিহারাদের এপ্রিল মাসের বেতন দেবে রাজ্য সরকার বলে সূত্রের খবর। সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে এই রায়ের বিরুদ্ধে। আর সেখানে চাকরি হারিয়ে ফোন করা শিক্ষক সুমিত পাত্রকে ৪ জুনের পর দেখা করতে বলেছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। তাই প্রশ্ন উঠছে, ইডি–সিবিআই কি এবার শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করবে? কলকাতা হাইকোর্ট কি পদক্ষেপ করবে?