অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআরসি পার্টির বিধায়ক পি রামকৃষ্ণ রেড্ডির বিরুদ্ধে বুথে ঢুকে ইভিএম ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছিল। সিসিটিভিতে সেই ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ সিসিটিভিতে রেকর্ড হয়েছিল। অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট সেই মামলায় বিধায়ককে আগাম জামিন দিলেও কড়া মনোভাব দেখালো সুপ্রিম কোর্ট। অন্ধপ্রদেশের ওই বিধায়ককে গণনা কেন্দ্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল দেশের শীর্ষ আদালত। তার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং বিচারপতির সন্দীপ মেহেতার বেঞ্চকে বিধায়ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি গণনা কেন্দ্র থেকে দূরে থাকবেন।
আরও পড়ুন: বুথের ভিতরে ঢুকে আছাড় মেরে EVM ভেঙে দিলেন শাসক দলের বিধায়ক, ভাইরাল ভিডিয়ো
বিধায়কের বিরুদ্ধে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠার পরেই নির্বাচন কমিশন অন্ধ্রপ্রদেশের ডিজিপিকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেক্ষেত্রে বিধায়কের বিরুদ্ধে ফৌজদারী ব্যবস্থা শুরু করতে বলেছিল কমিশন। তারপরেই গ্রেফতারি এড়াতে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিধায়ক। হাইকোর্ট রামকৃষ্ণকে আগাম জামিন দিয়েছিল। তার বিরোধিতা করে মামলাটি যায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তোলে, রেডিকে কেন আগাম জামিন দেওয়া হয়েছিল? সিসিটিভি দেখার পরেও হাইকোর্টের এমন সিদ্ধান্তকে ভুল বলে সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। ফুটেজ দেখার পর সুপ্রিম কোর্ট বিধায়ককে জামিন দেওয়াকে ‘বিচার ব্যবস্থার উপহাস’ বলে মন্তব্য করেন।
গত ১৩ মে চতুর্থ দফার ভোটে ইভিএম ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছিল রেড্ডির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিধায়ক পি রামকৃষ্ণ রেড্ডি মাচারলা বিধানসভা কেন্দ্রের ২০২ নম্বর বুথে ইভিএম ভাঙচুর করেছিলেন। এছাড়াও ওই বিধানসভা এলাকায় আরও একাধিক বুথে ভাঙচুর চালানো হয়। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএম ভাঙচুরের ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। এই ঘটনার পর পালনাড়ুর জেলা নির্বাচনী আধিকারিক ভাঙচুরের এই ফুটেজ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তারপরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার মুকেশ কুমার মীনা এই ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে তদন্তের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের ডিজিপিকে নির্দেশ দেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং তেলুগু দেশম পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নারা লোকেশ অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডির দলের বিধায়ক ভোটে পরাজয়ের ভয়ে ইভিএম নষ্ট করেছে। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে এই ভাঙচুরের ভিডিয়ো শেয়ার করেন। একইসঙ্গে বিধায়কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানান।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফার ভোট থেকেই অন্ধপ্রদেশে ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটে। তারপরে ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের তিন জেলা। তার মধ্যে পালনাড়ু হল একটি। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন নির্বাচন কমিশন। ওই জেলাগুলির পুলিশ সুপারদের সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও ভোট গণনার ১৫ দিন পর সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।