লোকসভা ভোটে NIA সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ইন্ডি জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করবেন বলে ঘোষণা করেছেন মমতা। কিন্তু হঠাৎ জোটকে বাইরে থেকে সমর্থনের ভাবনা কেন এল মমতা মাথায়? এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। আর তাতেই উঠে এসেছে নানা মুনির নানা মত।
আরও পড়ুন: 'TMC-তে ভোট দিচ্ছে, বিজেতিতে যাচ্ছে,' চতুর্থ দফা মিটতেই ইভিএম নিয়ে অভিযোগ মমতার
পড়তে থাকুন: গঙ্গাধর কয়ালের বিরুদ্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ নয়, নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
বুধবার চুঁচুড়ায় হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানকার বাংলার সিপিএম-কংগ্রেসকে ধরবেন না। ওই দুটো আমাদের সঙ্গে নেই। আমি দিল্লির কথা বলছি। ইন্ডিয়া জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে, বাইরে থেকে সবরকম সাহায্য করে আমরা সরকার গঠন করে দেব। যাতে বাংলায় আমার মা বোনেদের কোনওদিন অসুবিধা না হয়। ১০০ দিনের কাজে কোনওদিন অসুবিধা না হয়।’ এর পরই প্রশ্ন উঠছে, ইন্ডি জোটের শরিক হলে মমতা বাইরে থেকে সমর্থনের কথা বলছেন কেন?
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে ভোট যত এগোচ্ছে তত নিজের বিজেপি বিরোধী ভাবমূর্তি পোক্ত করতে চাইছেন মমতা। বিশেষ করে রাজ্যে ইন্ডি জোট দানা না বাঁধায় বারবার তৃণমূলকে আক্রমণ করছে বাম ও কংগ্রেস। আর তাতেই মমতার ওপর চাপ বাড়ছে। বাংলায় যে তিনিই ইন্ডি জোটের আসল শরিক এবং দরকারে বাইরে থেকে জোটকে সমর্থন করে বিজেপিকে রুখবেন তা বোঝাতেই মমতার এই অবস্থান।
অন্য একটি অংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না দলে তাঁর সমতুল ক্ষমতাশালী কেউ থাকুন। জোট সরকারের শরিক হলে এক বা একাধিক তৃণমূল সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব পাবেন। এতে দলে মমতার একনায়কতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। সেটা কোনও অবস্থাতেই চান না তিনি।
আরও পড়ুন: একই কেন্দ্রে বিজেপির ২ প্রার্থীর মনোনয়ন, বারাসতে প্রকাশ্যে দলের
উদাহরণ হিসাবে তারা বলছেন, ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে UPA ২ সরকারের সঙ্গী ছিল তৃণমূল। মমতা মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার আগে রেলমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেন। এর পর দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রীর পদে বসান মমতা। তিনি রেল বাজেটে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দিতেই তাঁকে সরিয়ে দেন মমতা। সেই রাতারাতি রেলমন্ত্রী হন মুকুল রায়। তিনি দীনেশ ত্রিবেদীর প্রস্তাব বাতিল করে দেন।
আরেকটি অংশের মতে, কেন্দ্রে বিজেপি না ফিরলেও তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য দর কষাকষির দরজা খোলা রাখতে বাইরে থেকে সমর্থনের কথা বলেছেন তিনি। যাতে তৃণমূলে সরকারের সঙ্গী করাতে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার শর্ত রাখতে পারেন মমতা।