ইদের ছুটি শেষেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লোকসভার ভোটযজ্ঞ। আর এই ছুটির ফাঁদে কপালে হাত পড়েছে তৃণমূলের। এবার ইদের ছুটি শেষ হতেই কর্মস্থলে ফিরতে হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। ছুটি শেষের ১৫ দিনের মধ্যে ভোট পড়ায় ফের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। যার ফলে ভোটদানের হারে বেশ খানিকটা প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলি। আর এই পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রায় পুরোটাই মুসলিম সম্প্রদায়ের হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের।
আরও পড়ুন: শ্রমিকের কাজ করতে মুসলমানরা যখন BJPশাসিত রাজ্যে যান তখন কি ইমামরা ঘুমান? শুভেন্দু
পড়তে থাকুন: ইন্ডি জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন ঘোষণা, মমতার রাজনৈতিক চাল নিয়ে নানা মুনির নানা মত
রাজ্যে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণে বিভিন্ন কেন্দ্রে গড়ে ৩ – ৫ শতাংশ ভোট কম পড়েছে। ভোটদানের হার কম হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে রাজনৈতিক নেতারা জানতে পেরেছেন, এবার লোকসভা নির্বাচনে ভোটদান করতে ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরতে পারেননি। কারণ হিসাবে তারা বলছেন, রমজান মাস উপলক্ষ্যে মার্চে বাড়ি ফিরেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ১০ এপ্রিল ছিল ইদ উল ফিতর। উৎসব শেষে এপ্রিলের মাঝামাঝি ফের কর্মস্থলে ফিরে গিয়েছেন তাঁরা।
ওদিকে ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রথম দফায় ভোট ছিল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে। তার আগেই কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন অনেকে। তাছাড়া ওই তিন কেন্দ্রে পরিষায়ী শ্রমিকের সংখ্যাও কম। ২৬ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটের আগেই ভিনরাজ্যে রওনা দিয়েছেন প্রায় সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক। ফলে ওই পর্ব থেকে ক্রমশ কমতে থাকে ভোটগ্রহণের হার। এর জেরে রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদার ২ কেন্দ্র, মুর্শিদাবাদের ৩ কেন্দ্র ও বীরভূমের ২ কেন্দ্রে ভোটের ফলে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশ।
পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রায় পুরোটাই মুসলিম সম্প্রদায়ের। উত্তরবঙ্গে ভোট প্রচারে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোট দিয়ে কর্মস্থলে যোগদানের অনুরোধ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রায় কেউই সেই অনুরোধ রাখতে পারেননি। পেটের টানে দেশ ছেড়ে তাদের ফের হতে হয়েছে প্রবাসী।
আরও পড়ুন: অভিযোগ তুলতে ১০ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিয়েছিল TMC, দাবি সন্দেশখালির নির্যাতিতার
গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের সময় যদিও ছবিটা অন্যরকম ছিল। জুন – জুলাইয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে ট্রেন বোঝাই করে রাজ্যে ফিরেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। পরিযায়ী শ্রমিক সরবরাহের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি জানান। এদের অনেকেই নির্মাণ শিল্প বা তার সহযোগী শিল্পে কাজ করেন। আর জুন – জুলাই বর্ষার সময় নির্মাণ শিল্পের কাজ বন্ধ থাকে। ফলে গত বছর ফিরতে সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার ইদের ছুটি শেষ হতেই ভোট এসে পড়ায় তাদের পক্ষে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি।