এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির একটি বড় হাতিয়ার হল সন্দেশখালির নারী নির্যাতনের ঘটনা। অথচ বারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে নারীবিদ্বেষীর অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, অর্জুন সিং নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর দ্বিতীয় বিয়ের তথ্য গোপন করেছেন। এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে অর্জুন সিংয়ের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন অর্জুন সিং। তাঁর বক্তব্য, হারার ভয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে। তবে তৃণমূলের পালটা দাবি, তাদের কাছে এ বিষয়ে তথ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলে থাকলেই ভাল, না থাকলে…’! অভিষেকের ‘খাঁচায় বন্দি’ মন্তব্যে অজুর্নের জবাব
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে, অর্জুনের দুটো বিয়ে। প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম ঊষা সিং এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর নাম শ্রাবন্তী সিং। আর প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের দুই ছেলের নাম যথাক্রমে বিধায়ক পবন সিং এবং অভিরূপ কুমার সিং। তৃণমূলের অভিযোগ, হলফনামায় অর্জুন সিং জানিয়েছেন, ঊষা সিং তাঁর স্ত্রী এবং অভিরূপ কুমার সিং তাঁর উপর নির্ভরশীল। কিন্তু, অভিরূপ কুমার সিংয়ের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কোনও বিবরণ দেননি অর্জুন। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের দাবি অভিরূপের মা হলেন-শ্রাবন্তী সিং, ঊষা সিং নন। তাছাড়া, হলফনামায় নিজের ছেলে হিসেবে বিধায়ক পবন সিংয়ের নামও উল্লেখ করেননি অর্জুন।
বারাকপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের জেলা মহিলা সভাপতি কেয়া দাস বলেন, ‘আমরা জানি হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী একজন পুরুষ বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের আগে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারেন না। তবে বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং স্ত্রী বর্তমান থাকা সত্ত্বেও আরও একবার বিয়ে করেছেন।’
তাঁর অভিযোগ, ২০১৯ সালেও অর্জুন সিং এই তথ্য প্রকাশ করেননি। তবে তখন তৃণমূলের কাছে কোনও প্রমাণ ছিল না। কিন্তু, এখন এই তথ্য তাদের কাছে আছে। তৃণমূল জেলা সভাপতির বক্তব্য, তথ্য গোপন করে অর্জুন সিং একজন নারীকে ছোট করার চেষ্টা করেছেন। শ্রাবন্তী সিং-কে অসম্মান করেছেন, তা মহিলাদের প্রতি চরম অসম্মানকর।
তিনি আরও অভিযোগ তুলেছেন, ‘বিজেপি সাংসদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর উপর অত্যাচার করছেন। তাঁকে অপমান করছেন। আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন যে, অর্জুন সিং তাঁর সঙ্গে কতটা খারাপ আচরণ করছেন। বারাকপুরের বাসিন্দাদের সচেতন হওয়া উচিত যে, অর্জুন সিং নিজের স্ত্রীকে সম্মান করেন না। বরং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী-এর মতো প্রকল্পের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের ক্ষমতায়ন করছেন। আর বিজেপি নেতারা নিজেদের হিন্দু এবং রামভক্ত বলে দাবি করেন অথচ নারীদের অসম্মান করছেন।’