২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে কয়েকটি আসনে জিততে অক্ষম হয়েছিল তৃণমূল। তার আগে শুধুমাত্র ২০১৪ সালে দক্ষিণ বসিরহাট কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপির কাছে হেরেছিল তৃণমূল। তবে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে ধাক্কা খাওয়ার পরে ঘুরে দাঁড়ায় ঘাসফুল শিবির। এরপর থেকেই রাজ্যে উপনির্বাচন মানেই শাসকদলের জয় 'নিশ্চিত'। তবে ২০২৩-এর সাগরদিঘিতে দেখা গেল উলটপূরাণ। ২০১১ সাল থেকে যে আসনে একচেটিয়া ভাবে তৃণমূল জিতে এসেছে, সেই আসন কংগ্রেসের কাছে হাতছাড়া হতে হয়েছে তৃণমূলের। এই আবহে মমতার গলায় শোনা গেল 'আঁতাত'-এর তত্ত্ব। পাশাপাশি ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ১৫ মাস আগেই মমতা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করবেন একাই। কোনও জোটেই তিনি যাবেন না। (আরও পড়ুন: মেঘালয়ে তৃণমূলের থেকে নীচে থেকেও সরকারে থাকছে BJP, ধন্যবাদ জ্ঞাপন কনরাড সাংমার)
তৃণমূলের আশা ছিল, মেঘালয়ে সরকার গঠন করে জাতীয় রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দেবে। তবে শেষ পর্যন্ত পাঁচ আসনে থমকে যেতে হয়েছিল ঘাসফুল শিবিরকে। এর আগে কংগ্রেস ভাঙিয়ে ১৩ বিধায়ক দলে এনে বিরোধী দলের তকমা পেয়েছিল তৃণমূল। এবার নিজের ক্ষমতায় ভোটে লড়ে সেই 'মর্যাদা'ও জুটবে না ঘাসফুল শিবিরের। এই আবহে মমতা অভিযোগ করেন, মেঘালয়ে নাকি কংগ্রেস প্রচার করেছে মমতা এখনও কংগ্রেসে। এদিকে প্রচারের সময় রাহুল গান্ধী সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। যার জবাব টুইটারে দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এতকিছুর মাঝেও মেঘালয়ে কংগ্রেসকে টপকাতে পারেনি তৃণমূল। সেরাজ্যে সমসংখ্যক আসন পেয়েছে দুই দলই। এদিকে সাগরদিঘিতে 'ডাহা ফেল' তৃণমূল। এই আবহে 'বিরোধী জোটে' যোগ না দেওয়ার ঘোষণা লোকসভা নির্বাচনের ১৫ মাস আগেই করে বসলেন মমতা।
গতকাল নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, 'তৃণমূল আর মানুষের জোট হবে লোকসভা নির্বাচনে। আমরা ওদের বাম এবং কংগ্রেসের কারও সঙ্গে যাব না। মানুষের সমর্থন নিয়ে একা লড়ব।' এদিকে সাগরদিঘিতে বাম-কংগ্রেসের জোটকে ‘অনৈতিক’ আখ্যা দিয়েছেন মমতা। বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীর জয়ের নেপথ্যে বিজেপির মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। মমতা বলেন, 'সিপিএম-কংগ্রেস একসঙ্গে রয়েছে। বিজেপির ভোটও ওদের কাছে গিয়েছে। এমন অনৈতিক জোট হলে কংগ্রেস, সিপিএম কী করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? ওরা যদি বিজেপির সাহায্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে চায়, তা হলে ওরা কী ভাবে নিজেদের বিজেপি বিরোধী বলতে পারে। এটা আমাদের কাছে একটা শিক্ষা। কংগ্রেস এবং সিপিএমের কথা শোনা উচিত নয়। বিজেপিকে যারা হারাতে চায়, আশা করব তারা আমাদের ভোট দেবে। আর বাম, কংগ্রেসকে যারা ভোট দেবে, তারা বিজেপিকে ভোট দেবে। আমি এটাই বিশ্বাস করি। আজকে সেই সত্যটাই প্রকাশ্যে এল।'